সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, 'এটা একটা বড় স্ক্যাম। এখানে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।'

কুন্তল, তাপস, নীলাদ্রির মতো অভিযুক্তদের নাম জড়িয়েছে চাকরি বিক্রিতে। কারও বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে, কারও বিরুদ্ধে মধ্যস্থতা করার। কিন্তু বারবার নিয়োগ মামলার শুনানিতে প্রশ্ন উঠেছে, আসল মাথা কে? এর আগে ‘গুরু কে?’ বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিচারক। বৃহস্পতিবার ফের সিবিআই (CBI)-এর কাছে সেই একই প্রশ্ন রাখলেন বিচারক। এদিন কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষকে আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেখানে বিচারক তদন্তকারী সংস্থাকে বলেন, ‘আপনারা ষড়যন্ত্রকারীদের কাছে পৌঁছন। এটা প্রয়োজন।’


মূল অভিযুক্তের কাছে যদি পৌঁছতে না পারেন, তবে এই অভিযুক্তদের ধরে রেখে তদন্তে কী গতি আসছে? কারও গোপন জবানবন্দী কি নিয়েছেন আপনারা যাঁদের ধরা হয়েছে, যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন, সেগুলো রেকর্ড করেছেন? সিবিআই-কে এদিন এমনই সব প্রশ্ন করেন বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়।

উত্তরে সিবিআই-এর আইনজীবী বলেন, ‘এটা একটা বড় স্ক্যাম। এখানে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা ভুল পথে চালিত করছেন। আমরা সে জন্য অত্যন্ত সতর্কভাবে পা ফেলছি। কোথা থেকে, কার মাধ্যমে টাকা এসেছে, কোথায় গিয়েছে, এটা জানার জন্য লাগছে।’


কুন্তলের আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, ‘হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে প্রাথমিক পর্ষদের বিরুদ্ধে। কিন্তু আজ পর্যন্ত বোর্ডের কিংবা অফিসের একজনও অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন কি তদন্তকারীরা? এতদিন পরেও অফিসাররা অজ্ঞাতপরিচয় থেকে গেল!’ যে কোনও শর্তে জামিনের আবেদন জানান তিনি। কুন্তল আইনজীবী শেখ মেহেদী নওয়াজ এদিন আরও বলেন, অভিযোগ উঠেছে প্রাইমারির চাকরি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কুন্তল তো প্রাইমারি বোর্ডের কেউ নয়। এ ক্ষেত্রে সিবিআই-এর ব্যর্থতা আছে বলে মনে করছেন তিনি।

যতবার ডেকে পাঠানো হয়েছে, ততবারই আমি হাজিরা দিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে নতুন করে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। এদিন আদালতে এমনটাই দাবি করেন তাপস মণ্ডল। অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে টাকা নিয়ে কুন্তল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে সিবিআই। চাকরি দেওয়ার জন্য অযোগ্য প্রার্থীদের থেকে টাকা তোলার চক্র চালাতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে তাপসের বিরুদ্ধে। তবে তাঁর দাবি, সে রকম কোনও তথ্য পায়নি গোয়েন্দা সংস্থা। তাপসের বক্তব্য, তিনি অসুস্থ, নিয়মিত ওষুধ প্রয়োজন। জেলে তাঁর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন তিনি।

তিনজনেরই জামিনের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে এদিন। আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours