ফের রাতের শহরে দুর্ঘটনা। বেহালা রায়বাহাদুর রোডে লরির ধাক্কায় মৃত্য়ু হয় এক বাইক আরোহীর। মৃতের নাম অশোক কুমার নায়েক (৪৫)। ঘটনাটি ঘটেছে বেহালা রায়বাহাদুর রোডে।

ওই ব্যক্তির মাথাটি একেবারে থেঁতলে গিয়েছে। অনেক রাতেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তবে যে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, তাঁরা জানিয়েছেন, অশোকের মাথায় হেলমেট ছিল না।লরির গতিবেগও স্বাভাবিক থেকে বেশি ছিল। লরিটি বাইকে ধাক্কা মারে। বাইক থেকে ছিটকে যান অশোক। লরির পিছনের চাকা অশোকের মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অশোকের।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। বেহালা থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় বিদ্যাসাগর হাসপাতালে। অশোকের বাড়ি বেহালা সেনহাটি এলাকায়। ঘটনার পর থেকে পলাতক লরি চালক। তবে ঘাতক লরিটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।

ভোর রাতে ট্রাক চালকদের চোখ লেগে আসার ঘটনা রুখতে ও সর্বোপরি রাতের দুর্ঘটনা কমাতে ট্রাফিক পুলিশ নয়া উদ্যোগ নিয়েছে। চা, বিস্কুট দিয়ে সজাগ রাখা হচ্ছে ট্রাক চালকদের। প্রসঙ্গত, রবিবার কাকভোরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে নদিয়ায়। পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৮ জন শ্মশানযাত্রী। মৃতদেহ সত্‍কার করতে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। উত্তর চব্বিশ পরগনার বাগদার পারমদন এলাকার বাসিন্দা শিবানি মুহুরীর মৃত্যুর পর ঠিক হয়, সত্‍কার করা হবে পাশের জেলা নদিয়ার নবদ্বীপে। সেই মতো রাতেই আত্মীয়, পরিজন, গ্রামবাসী মিলিয়ে পঁচিশ-ছাব্বিশজন মৃতদেহ নিয়ে মালবাহী গাড়িতে সত্‍কারের জন্য রওনা হন। এরপরই নদিয়ার ফুলবাড়িতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে সেই শববাহী গাড়ি।

ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কয়েকজনের। সকলকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। সেখানেও মৃত্যু হয় কয়েকজনের। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ছ'জনকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে যান পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। লরির চালককে আটক করেছে পুলিশ। শববাহী গাড়ির চালকের ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়।

এরপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। দুর্ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইট করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। নদিয়ার ভয়াবহ পথদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে বিশেষ পদক্ষেপ নবান্নের। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর পৌরহিত্যে সোমবার এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক, পুলিশসুপার, পিডব্লুডির আধিকারিকরা সেই বৈঠকে অংশ নেন। ছিলেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরাও। সেই বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, রাস্তার ধারে যে সমস্ত সরকারি হাসপাতালগুলিতে এখনও ট্রমা কেয়ার ইউনিট নেই, তা অতি দ্রুততার সঙ্গে তৈরি করতে হবে। এই ট্রমা কেয়ার সেন্টার থাকা অত্যাবশ্যক বলে জানিয়ে দিয়েছে রাজ্য।

দুর্ঘটনার ভয়াবহতা গোটা রাজ্যকে কাঁপিয়েছে। রাজ্য় সরকার তথা কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের তরফেও কড়া পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাতে অনেকক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার মূল কারণ, চালকের চোখ লেগে আসাই হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে চালকরা যাতে সজাগ থাকেন, তাতে আরও বেশি মানবিক কলকাতা পুলিশ। বিভিন্ন জায়গায় ট্রাক-লরি দাঁড় করিয়ে চালকদের চা খাওয়াতে দেখা গেল কলকাতা ট্রাফিক পুলিশকে। তারও মাঝে এমন দুর্ঘটনা ঘটছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours