কিন্তু এই সবের জেরে এখন বিড়ম্বনায় ওই মাছ ব্যবসায়ী। শুধু সুকুমারবাবুই নয়, তাঁর স্ত্রীও রীতিমত চটেছেন। বলছেন, 'এক গরু চোরের সঙ্গে আমার স্বামীর তুলনা?'

শেওড়াফুলি: মাছের বাজারে কেষ্ট! সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল ছবি। অবিকল সেই মুখ। আর বিক্রি করছেন মাছই। এক সময় মাছ বিক্রিই করতেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। দুইয়ে দুইয়ে চার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ঝড় এই ছবিকে কেন্দ্র করে। TV9 বাংলা শেওড়াফুলি বাজারে ঢুঁ মেরে খোঁজ নিলেন সেই মাছ ব্যবসায়ী যাঁর মুখ অবিকল কেষ্টর মতো। জানা গেল, তাঁর নাম সুকুমার হালদার। সামান্য মাছ ব্যবসায়ী। এই ছবি ভাইরাল হতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। গরু পাচার দুর্নীতির সঙ্গে যার দূর-দূরান্তে সম্পর্ক নেই, তা সত্ত্বেও অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর নাম জুড়ে যাওয়ায় আক্ষেপ করতে শোনা গিয়েছে সুকুমার বাবুর গলায়। রীতিমতো বিরক্ত তাঁর স্ত্রীও।


গরুপাচার কাণ্ডে বাংলা ছেড়ে এখন দিল্লিতে অনুব্রত মণ্ডল। নিজেদের হেফাজতে রেখে মুহূর্মুহূ জিজ্ঞাসাবাদ করছেন ইডি-র তদন্তকারীরা। একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য উঠে আসছে। অনুব্রত নাকি গরু পাচারে প্রোটেকশন মানির সঙ্গে কাটমানিও নিতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গোটা বাংলা যখন অনুব্রতর খবরে জোর চর্চায়, সেই চর্চার বৃত্তে চলে এসেছেন সামান্য মাছ ব্যবসায়ী সুকুমার হালদারও। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই, অবিকল অনুব্রতর মতো দেখতে বলে নেটিজেনরা নানা ধরনের মন্তব্য করছেন। আর এই নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেল সুকুমার বাবুর স্ত্রী শুক্লা দেবীকে।

শুক্লাদেবী বললেন, “আমার স্বামী অনুব্রত? কী অবস্থা। আমারা খুব অভাবী। অনেক কষ্ট করে এই ব্যবসা দাঁড় করিয়েছি। গরু পাচারকারী একজন ক্রিমিনালের সঙ্গে আমার স্বামীর তুলনা? আমরা লক্ষ্মী ভান্ডারের টাকায় চাল কিনি। যে আমার স্বামীর ছবি তুলে এমন ভাইরাল করেছে তার উপযপুক্ত শাস্তি চাই।”


শেওড়াফুলি মাছ বাজারে গত ৩০ বছর ধরে মাছ বিক্রি করছেন সুকুমার হালদার। তিনি শেওড়াফুলি নিমাইতীর্থ ঘাট এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। সুকুমারের পাশে বসে মাছ বিক্রি করেন আর এক ব্যবসায়ী রানা পাত্র। সুকুমারকে যে অনুব্রতর মত দেখতে তা কোনও দিন নজরে আসেনি তাঁর। তবে ছবি ভাইরালের পর ভাবছেন তিনিও। শেওড়াফুলি বাজারের আরও এক ব্যবসায়ী ব্রজ সাহা বলেন,”আমার মোবাইলেও পাঠিয়েছে একজন ছবিটা। এটা মজার ছলে করা হয়েছে। আমি ভাবলাম শেওড়াফুলিতে আবার অনুব্রত এলো কোথা থেকে?

উল্লেখ্য, এক দুর্ঘটনায় সুকুমার হালদারের পা ভেঙে যায়। অস্ত্রোপচার করেও পা ঠিক হয়নি। বাড়ি বিক্রি করে চিকিৎসা করা হচ্ছে বলে জানান সুকুমার বাবুর স্ত্রী। যাঁকে ঘিরে এত শোরগোল সেই সুকুমারবাবু কী বলেছেন? “এই পা নিয়ে ভুগছি। অনেক লড়াই করেছি। তার মধ্যে এই ইয়ার্কি। আমি সৎ পথে রোজগার করছি। যা করি নিজে করি।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours