সাড়ে তিন হাজার টাকায় ১৪ দিন। কোভিড আক্রান্তদের জন্য সবচেয়ে কম খরচে সেফ হোম চিকিৎসা পরিষেবা কলকাতায়। বেড মিলছে না হাসপাতালে, এমন অভিযোগ ভূরিভূরি। উপসর্গহীন বা সামান্য উপসর্গযুক্ত রোগীরা যাতে হাসপাতালে শয্যা আটকে না রাখেন সে জন্য পুর এলাকায় তৈরি করা হচ্ছে ‘সেফ হোম’। ইতিমধ্যেই গীতাঞ্জলি ও কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামকে সেফ হোম হিসেবে ঘোষণা করেছে রাজ্যসরকার। গীতাঞ্জলির জন্য কেএমডিএ-কে এবং কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামের জন্য পূর্ত দপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সারা দেশের মধ্যে ন্যূনতম খরচে এই সেফ হোম পরিষেবা দিচ্ছে উত্তর কলকাতার জেএন রায় হাসপাতাল। মাত্র ৩৫০০ টাকা খরচে ১৪ দিনের পরিষেবার বন্দোবস্ত করেছে ওই হাসপাতাল। কী মিলবে সাড়ে তিনহাজার টাকায়? ডাক্তার এবং একজন পুষ্টিবিশারদ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বলে দেবেন কী কী খেতে হবে। এছাড়াও মিলবে প্রতিদিন দেখভাল করার জন্য একজন নার্স। বাড়িতেই পৌছে দেওয়া হবে ডিজিটাল থার্মোমিটার, গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কোনও সময় রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে মুহূর্তে তাকে ভর্তি করিয়ে দেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সারা দেশের মধ্যে এত কম খরচে ১৪ দিনের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নজির নেই।

বাস্তব চিত্র বলছে, শহরের অনেক প্রবীণ বাড়িতে একাই থাকেন। ছেলেমেয়েরা কর্মসূত্রে ভিনরাজ্যে অথবা বিদেশে। তাঁরা চাইছেন কোভিড আক্রান্ত হলেও কম উপসর্গ থাকলে সরকারি সেফ হোমে না গিয়ে বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা করতে। সল্টলেকের বিজে ব্লকের বাসিন্দা গৌরী রায়চোধুরির একমাত্র ছেলে কানাডায়। তাঁর কথায়, “সরকারি সেফ হোমে যাওয়া আমাদের পক্ষে কষ্টকর। অন্যদের সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার আশঙ্কাও রয়েছে। তিনতলা বাড়িতে একা থাকি। আমাদের জন্য বাড়িতেই যদি কোনও সেফ হোম পরিষেবা দেওয়া যায় সেটা ভাল হয়।” ইতিমধ্যেই একাধিক বেসরকারি হাসপাতালে মিলছে বাড়িতে চিকিৎসক এনে এই সেফ হোম পরিষেবা। কোভিড আক্রান্ত রোগীর সামান্য উপসর্গ থাকলে তাকে বাড়িতেই রেখে চিকিৎসা করার সুযোগ।

হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনেকেই টাকা থেকেও পরিষেবা পাচ্ছেন না। কম উপসর্গযুক্ত রোগীরা বেড আটকে রেখেছেন এমন অভিযোগও আসছে। এমন একটা সঙ্কটজনক সময়ে চেষ্টা করা হচ্ছে সকলে যেন চিকিৎসা পান। আর তাই মাত্র ৩৫০০ টাকায় ১৪ দিনের সেফ হোম পরিষেবা। স্বাস্থ্যদপ্তরের সম্মতি নিয়ে ইতিমধ্যেই যে সমস্ত এলাকায় করোনা সংক্রমণ তুঙ্গে সেখানে জনমত তৈরির কাজে নেমেছে ‘কোভিড কেয়ার নেটওয়ার্ক’ (সিসিএন)। সরকারি চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরি, যোগীরাজ রায়, কার্ডিওলজিস্ট অরিজিৎ ঘোষের নেতৃত্বে সিসিএন-এর সঙ্গে রয়েছেন কোভিডজয়ী চিকিৎসক সায়ন্তন চক্রবর্তী, হাওড়ার অমৃতা পান্ডা এবং এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্তরা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours