শনিবার সকালে কেএমআরসিএলের কর্তারা পর্যবেক্ষণে এসে জানান, মেট্রো সুরঙ্গের ভিতরে জলস্রোতের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।

২৪ ঘণ্টা পার করেও কাটেনি বউবাজারের ফাটল আতঙ্ক। ঘরছাড়া পরিবারগুলির চোখে মুখে অসহায়তার ছাপ। হোটেলের ঘরে উদ্বেগে দিন কাটছে তাঁদের। এরইমধ্যে শনিবার বউবাজারের পরিস্থিতি নিয়ে নবান্নে জরুরি বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। থাকবে কেএমআরসিএল, কলকাতা পুরনিগম এবং কলকাতা পুলিশের প্রতিনিধি। এদিন বিকেল ৪টে থেকে এই বৈঠক শুরু হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে ভার্চুয়ালি থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। থাকার কথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও রেল বোর্ডের প্রতিনিধিদের‌।



মেট্রোর কাজ চলছে বউবাজারে। এই মেট্রো শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেডকে যুক্ত করবে। ইতিমধ্য়েই এই রুটের বাকি অংশের কাজ সারা। কিন্তু যত বিপত্তি বউবাজারে সুড়ঙ্গের কাজ করতে গিয়ে। শিয়ালদহ থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ৩৮ মিটারের মধ্যে ২৯ মিটারে স্ল্যাব পাতার কাজ শেষ। কিন্তু ৯ মিটারে স্ল্যাব বসাতে গিয়েই নাকানিচোবানি অবস্থা কেএমআরসিএলের।

২০১৯ সালে টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম (TBM) চণ্ডী হাওড়া ময়দানের দিক থেকে গঙ্গার তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে খুঁড়তে আসছিল। টিবিএম চণ্ডী বৌবাজারের কাছে আসতেই বিপর্যয় ঘটে। পাশাপাশি ট্র্যাক দিয়ে আসছিল টিবিএম ঊর্বী। শিয়ালদহ থেকে ঊর্বী ইউটার্ন নিয়ে আবার বউবাজারের দিকে আসার কথা ছিল। তার আগে এবার ঘটল বিপত্তি। ঊর্বী এবং চণ্ডী মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায়। সেটিকে বউবাজার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু দু’দিকের সুড়ঙ্গ এক করার জন্য একটি ‘জয়েন্ট বক্স’ তৈরি করার সিদ্ধান্ত হয়।

জয়েন্ট বক্স বসানোর জন্য ২৯ মিটারের কংক্রিটের স্ল্যাব তৈরি করা হয়েছে। বাকি রয়েছে ৯ মিটার স্ল্যাব তৈরি কাজ। এই ৯ মিটারের কাজের জন্য ১.৫ মিটার মাটি খোঁড়ার কাজ হচ্ছিল। সেই কাজ করতে গিয়ে এর আগে মে মাসে বিপত্তি হয়। জল ঢুকে আসে। এবারও সেই ছবি। একাধিক ছিদ্র ধরে জল বেরোতে থাকে।

যদিও শনিবার সকালে কেএমআরসিএলের কর্তারা পর্যবেক্ষণে এসে জানান, মেট্রো সুরঙ্গের ভিতরে জলস্রোতের ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। উন্নত ও দক্ষতার মাধ্যমে গ্রাউটিং ও পলিইউথিরিন কেমিক্যাল সঠিকভাবে ব্যবহার করায় এই জল গতিতে বেরিয়ে আসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত পর্যবেক্ষণের পর কেএমআরসিএল এর কর্তারা জানিয়েছিলেন, জলস্রোত বন্ধ করতে আরও সময় লাগবে। কিন্তু গ্রাউটিংয়ের কাজ নিখুঁতভাবে হওয়ায় জলস্রোত নিয়ন্ত্রণ করা একাধিক অংশে সম্ভব হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণে জানান কেএমআরসিএলের কর্তারা। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকালেই কলকাতা পুরনিগম বৈঠকে বসে। বিকেলে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours