অপুষ্টিজনিত কারণে শিশুপুত্রকে হত্যার দায়ে এক 'ভেগান' বা নিরামিষাশী মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল এক মার্কিন আদালত।


বর্তমানে, গোটা পৃথিবী জুড়েই বাড়ছে ‘ভেগান’ আন্দোলন। ‘ভেগান’ অর্থাৎ, নিরামিষভোজীদের দাবি, মানুষের বেঁচে থাকার জন্য মাছ-মাংসের মতো আমিষ খাদ্যের প্রয়োজনই নেই। ফল-শাকসবজির মধ্যেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া যায়। কিন্তু, আমেরিকার সাম্প্রতিক এক ঘটনা, এই তত্ত্বকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিল। গত সোমবার (২৯ অগস্ট) অপুষ্টিজনিত কারণে তাঁর শিশুপুত্রকে হত্যার দায়ে এক ‘ভেগান’ বা নিরামিষাশী মহিলাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে এক মার্কিন আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৮ মাস বয়সী ছেলেকে তিনি শুধুমাত্র কাঁচা ফল এবং সবজি খাওয়াতেন। যার ফলে চরম অপুষ্টিতে ভুগে মৃত্যু হয়েছে শিশুটির।



সাজাপ্রাপ্ত মহিলার নাম শিলা ও’লিয়ারি। ৩৮ বছরের শিলা ফ্লোরিডার বাসিন্দা। তাঁর গোটা পরিবার কঠোর নিরামিষভোজী খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করত। তদন্তে জানা গিয়েছে, শিলা এবং তাঁর স্বামী রায়ান প্যাট্রিক ও’লিয়ারি শুধু কাঁচা ফল এবং শাকসবজি খেতেন। এমনকি, ১৮ মাস বয়সী শিশুপুত্র এজরা ও’লিয়ারিকেও তাঁরা এই খাদ্যই দিতেন। বাড়তি হিসেবে সে পেত মায়ের বুকের দুধ। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে এজরার মৃত্যু হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সেই সময় শিশুটির ওজন ছিল মাত্র ৮ কিলোগ্রাম! বয়স ১৮ মাস হলেও, তার আকার ছিল কোনও ৭ মাস বয়সী শিশুর মতো। ময়নাতদন্তে দেখা গিয়েছিল ছোট্ট এজরা অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গিয়েছে। শিলার বিচার চলাকালীন আদালতে তদন্তকারী এক কর্তা জানান, ১৮ মাস ধরে প্রায় অনাহারেই ছিল শিশুটি।
চলতি বছরের জুন মাসেই হত্যা, শিশু নির্যাতন, অনিচ্ছাকৃত হত্যা, শিশু অবহেলার মতো বেশ কয়েকটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। সোমবার, ফ্লোরিডার এক আদালত তাঁকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। শিশু অবহেলার জন্য অতিরিক্ত পাঁচ বছরের কারাবাসের সাজাও দেওয়া হয়েছে তাঁকে। তাঁর স্বামী রায়ান প্যাট্রিক ও’লিয়ারিও বর্তমানে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে কারাগারে রয়েছেন। এই দম্পতির ৩ এবং ৫ বছর বয়সী আরও দুই সন্তান রয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন তারাও অপুষ্টিতে ভুগছে। বিচারক জানিয়েছেন, কারাবাসের পাশাপাশি, ওই দুই শিশুর সঙ্গেও কোনও রকম যোগাযোগ রাখতে পারবেন না শিলা।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours