পশ্চিম মেদিনীপুর: ধান ক্ষেত, খোলা প্রান্তর। কোনও আড়ালে-আবডালে নেই। মাঠের একেবারে মাঝেই উন্মুক্ত শরীরে পড়ে পাড়ার বউ। সকালে মাঠে যাঁরা কাজে গিয়েছিলেন, তাঁরা রীতিমতো তাঁকে দেখে চমকে ওঠেন। এ কী অবস্থা! মহিলার শরীর তখন নিথর। চোখেমুখে কালশিটে ছাপ। দেখেই গোটা বিষয়টি বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা।

উল্কা গতিতে খবর চাউর হয়ে যায় এলাকায়। গ্রামবাসীদেরই কয়েকজন ততক্ষণে একটা কাপড় এনে ফেলে দেন ওই মহিলার শরীরের ওপর। পিংলাতে আবারও এক গৃহবধূর বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হল। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ তুলছেন গ্রামবাসীরা। বিশেষভাবে সক্ষম মহিলাকে ‘ধর্ষণে’র ঘটনায় রীতিমতো তপ্ত রয়েছে পিংলা। শোরগোল পড়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। জল গড়িয়েছে আদালতে। দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। তারই মধ্যে এই ধরনের ঘটনা চাঞ্চল্য ছড়াল। ইতিমধ্যেই নতুন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পিংলা থানার পুলিশ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে গ্রামের রাস্তা ধরেই কাজে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও ফেরেননি। পরিবারের তরফে সম্ভাব্য সমস্ত জায়গায় খোঁজ করা হয়। সকালেই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করার কথা ভেবেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তখনই প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ক্ষেতে ছুটে যান তাঁরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন দেহটা চিত্‍ হয়ে পড়েছিল। পরনে একটা সুতো পর্যন্ত ছিল না। দেখেই তাঁরা শিউরে ওঠেন। নিম্নাঙ্গে ক্ষত ছিল বলেও দাবি গ্রামবাসীদের একাংশের। মুখেও কালশিটের দাগ ছিল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ধর্ষণ করেই খুন করা হয়েছে। তা না হলে এরকম অবস্থা তাঁর কীভাবে হবে?

গ্রামবাসীদের এক জন বললেন, “এই দৃশ্য দেখার মতো নয়। সকালেই এমনটা দেখি। ক্ষেতের মধ্যেই পড়েছিল। দেখে মনে হচ্ছিল গণধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের যেন ফাঁসি হয়।”

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পিংলা থানার পুলিশ। মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । পরিবারের সদস্যরাও একই অভিযোগ তুলেছেন। বাড়ির লোক ও গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই পিংলায় ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পিংলায় বিশেষভাবে সক্ষম এক মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ জানাতে নির্যাতিতাকে তিন ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রাখা হয় বলে দাবি বিজেপির। ঘটনার পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তোলা হয়।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours