সন্তান অবাধ্য— এই অভিযোগ নেই এমন বাবা-মা খুঁজে পাওয়াই কঠিন। অবাধ্য ছেলে বা মেয়ের দৌরাত্ম্য নিয়ে আত্মীয় বা বন্ধু মহলে আলোচনাও কম হয় না। কিন্তু ভেবে দেখেছেন, কেন কথা শোনে না আপনার সন্তান? তা কি কেবলই তার দোষ, না কি সেখানে কোনও ফাঁক থেকে যাচ্ছে আপনার তরফেও? এ সব উপায় অবলম্বন করুন আর তফাত দেখুন।
কেবল নির্দেশের ভঙ্গিতে কথা বললে তা শিশুর পক্ষে বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। বরং তাকে খেলার ছলে নির্দেশ দিন। সংক্ষেপে বলুন আর শিশুর বয়স অনুপাতে শব্দ প্রয়োগ করুন। মনোবিদদের মতে, বেশির ভাগ শিশুই বুঝতে পারে না ঠিক কী করলে সে বকুনি খাবে না, এই টেনশন থেকেই সে কথা শোনার প্রবৃত্তি হারায়।
সন্তান যখন কথা বলে, কিছু বোঝাতে চায়, তখন তার কথার গুরুত্ব দেন কি? না কি সে সব পাত্তা না দিয়ে কেবল নিজের চাহিদা ও তার ভুল-ত্রুটি নিয়েই ধমক দিতে থাকেন? তা হলে আজ থেকেই এই অভ্যাস বদলান। সন্তান অন্যায় করলেও তাকে তার স্বপক্ষের যুক্তিগুলো বলতে দিন। তা হলে তা খণ্ডন করে সন্তানকে ঠিক পথে আনতে পারবেন।
সন্তান যখন তার বন্ধু বা স্কুলের গল্প বলে, বা আপনার সঙ্গে খেলতে চায় তখন তা আমল দেন? অনেক সময়ই দেখা যায়, সন্তান কথা বললে যে সব অভিভাবক পাত্তা দেন না, তাদের সন্তানদের মধ্যে এ নিয়ে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়। অবচেতনে সেই ক্ষোভ বুঝতে পারে না সন্তানও। কিন্তু তার প্রভাব তৈরি হয় আচরণে। অবাধ্য হতে শুরু করে।
অনেক সন্তান আছে, যারা ইচ্ছাকৃতই বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়। খুব ছোটবেলাতেই এমন স্বভাবের হদিশ পেলে তাকে প্রথমেই শাসন করে আরও একগুঁয়ে করে তুলবেন না। তার চেয়ে তার এই অভ্যাস বদলাতে তার বেড়ে ওঠায় কিছু নিয়মশৃঙ্খলা আনুন। কাজ না হলে মনোস্তত্ববিদের সাহায্য নিন।
সারাক্ষণ সন্তানের সমালোচনাই করে যান? অন্যের সঙ্গে তুলনা করে তাকে খাটো করেন? এতে সন্তাম বাবা-মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা হারায়। এমন স্বভাব নিজের থাকলে আগে তা বদলান। সন্তান যেন কখনও আপনার কাছে তার নিজের মূল্য নিয়ে সংশয়ে না থাকে। এতে সম্পর্কের ক্ষতি হয়। সে আরও অবাধ্য হয়ে ওঠে।
সামান্য  অবাধ্য হলেই কি তাকে কড়া শাসন করে ফেলেন? এমন হলে নিজেকে একটু নিয়ন্ত্রণ করুন। সন্তানের হিতে যে কাজটা করছেন, তা যেন তার মনে উল্টো প্রভাব ফেলে আপনাকেই তার দূরের মানুষ করে না তোলে। তার চেয়ে ছোটখাটো ভুল করলে একটু বন্ধুর মতো বোঝান না, দেখবেন, ফল মিলছে হাতেনাতে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours