আত্মনির্ভর প্রকল্পে প্রথম কাজ শুরু হল কলকাতা থেকে। শুরু হয়ে গেল জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রো প্রকল্পে লাইন পাতার কাজ। ইউরোপ নয় ছত্তিসগড় থেকে কলকাতায় এসে পৌছে গেছে ইস্পাতের রেল। লাইন বা রেল বসানোর জন্য এসে গেছে নেদারল্যান্ডসের  মেশিন 'মোবাইল ফ্ল্যাশব্যাট ওয়েল্ডিং'। যা দিয়ে জোড়া হবে লাইনের অংশ। আর ভি এন এল সূত্রে খবর জোকা ডিপো থেকে মাঝেরহাট অবধি প্রায় ১০ কিমি লাইন পাতার মতোই ইস্পাত এসে পৌছে গিয়েছে। আপাতত তা রাখা আছে হাওড়ার শালিমার ও জোকা মেট্রো ডিপোর কাস্টিং ইয়ার্ডে। যে সংস্থা এই লাইন পাতার কাজ করবে তাদের প্রতিনিধিরাও এসে গিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। জোকা ডিপো থেকে তারাতলা অবধি মেট্রোর স্টেশন বিল্ডিং নির্মাণের কাজ শেষ। এবার এই পথে শুরু হতে চলেছে মেট্রোর লাইন পাতার কাজ। তার জন্য ছত্তিসগড় থেকে আনা হয়েছে ১৩০০ মেট্রিক টন ইস্পাত। খুব শীঘ্রই আসছে ১৭০০ মেট্রিক টন ইস্পাত। ১৮ মিটার করে লম্বা এক একটি রেলের খন্ড আনা হয়েছে। এগুলিকেই জোড়া হবে। আর ভি এন এলের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, "মেট্রো লাইনে কোনও জয়েন্ট থাকে না।
তাই প্রতিটি খন্ড বসিয়ে বিশেষ যন্ত্র মোবাইল ফ্ল্যাশব্যাট ওয়েল্ডিং দিয়ে জোড়া হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন তাপমাত্রায় তা পরীক্ষা করা হবে।" পণ্যবাহী ট্রেন বা মেল, এক্সপ্রেস ট্রেন যখন চলাচল করে তখন রেল লাইনের ওপরে তার ভার অনেক বেশি। সেই তুলনায় মেট্রোর ভার অনেকটা কম হয়। কিন্তু মেট্রো পরিষেবা যেহেতু ঘন ঘন হয় তাই রেলের ওপরে ঘর্ষণ এবং তাপ এতটাই উৎপন্ন হয় তাই এই কাজ অনেক বেশি নিখুঁত ও সচেতনতার সাথে করতে হয়। আর ভি এন এলের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, মেট্রো লাইন হয় সুড়ঙ্গ নয় মাটির অনেক ওপরে হয়। ফলে এখানে লাইন বদলানো খুব একটা সহজ ব্যপার নয়। তাই কমপক্ষে ১০০ বছর ধরে পরিষেবা দিতে হবে এমনটা ভেবেই এই রেল বা ইস্পাত নিয়ে আসা হয়েছে।" আর ভি এন এল সূত্রে খবর, জিন্দলদের ছত্তিসগড় কারখানা থেকে রেলে করে শালিমার ইয়ার্ডে নিয়ে আসা হয়েছে এই ইস্পাত। ক্রোমিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ সহ নানা উপকরণ দিয়ে এই ইস্পাত বানানো হয়েছে। সাধারণ লাইনের চেয়ে এই লাইনের পীড়ন সহ্য করার ক্ষমতা অনেকটা বেশি। বিশেষ প্রযুক্তিতে বানানো এই ইস্পাত কয়েক মিনিট অন্তর ট্রেন চলাচলের পরেও ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তাই এই ভারতীয় সংস্থাকে বাছাই করেছে আর ভি এন এল। যেহেতু ইউরোপ  রেল লাইন তৈরিতে দক্ষ তাই সেখান থেকেই আগে ইস্পাত আনা হত।


ভারতে একটি মাত্র ইস্পাত সংস্থা জিন্দল গ্রুপ এখন যদিও এই রেল লাইন বানানোর কাজ শুরু করেছে। তাদের তৈরি করা সেই ইস্পাত রেল লাইন হিসেবে জোকা প্রকল্পে ব্যবহার হচ্ছে।শনিবার থেকেই  এই লাইন পাতার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যেই তৈরি করা হচ্ছে একটি মোটা কংক্রিটের স্তর। সেই কংক্রিটের ওপর বসছে ছত্তিসগড়  থেকে আনা রেল লাইন। সাইট ইনচার্জ যশবন্ত দুবে জানিয়েছেন, তাদের লক্ষ্য আগামী ছ'মাসের মধ্যে জোকা ডিপো থেকে তারাতলা অবধি এই লাইন পাতার কাজ শেষ করা। রেল মন্ত্রক চাইছে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে জোকা থেকে তারাতলা অবধি মেট্রো চলাচল শুরু করে দিতে। সেই কারণেই দীর্ঘ দিনের জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত গতিতে চলছে এই কাজ৷
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours