আশাকর্মী উমা মণ্ডলের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা। যদিও বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, তাঁরা ঘেরাও করেননি। তাঁরা জানতে এসেছেন কেন তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।


জেলায় জেলায় আবাস যোজনার (AWAS Yojana) তালিকা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক স্তরে গ্রামে গ্রামে গিয়ে এই তালিকা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আশাকর্মীদের (Asha Workers)। বিডিও অফিস থেকে তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে এই নিয়ে। এদিকে তালিকা যাচাই করার সময় অনেকেরই নাম বাদ গিয়েছে তালিকা থেকে। এবার তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে আশাকর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা (Bagda) ব্লকের রণঘাট গ্রাম পঞ্চায়েতে। এখানে পুরদহ গ্রামের এক আশাকর্মী উমা মণ্ডলের বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়া গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা। যদিও বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, তাঁরা ঘেরাও করেননি। তাঁরা জানতে এসেছেন কেন তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।


ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই আশাকর্মী। উমা মণ্ডল নামে ওই আশাকর্মী বলছেন, “বিডিও আমাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। সেখানে বলা হয়েছিল, চার দেওয়াল যদি পাকা থাকে… সেক্ষেত্রে তার উপরে যদি টিন, টালি বা তাঁবুও থাকে, সেটিও আমাদের পাকাবাড়ি হিসেবে দেখতে হবে। আমরা তো সরকারের দাস। আমাদের যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, সেইভাবে আমরা সার্ভে করেছি। আমরা তো বিডিও স্যরের কথা অমান্য করে, তার উপরে যেতে পারি না।” ওই আশাকর্মী জানাচ্ছেন, তিনি আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে পারছেন না। তাঁর স্বামীকেও মারধরের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কথা তিনি বিএমওএইচ, জয়েন্ট বিডিওকে জানিয়েছেন বলেও দাবি ওই আশাকর্মীর। এদিকে আশাকর্মীরা বাড়ির সামনে উত্তেজনার পরিস্থিতির খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বাগদা থানার পুলিশকর্মীরা। পুলিশ গিয়ে সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

ওই ঘটনার বিষয়ে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলছেন, “এখানে আশাকর্মীর কোনও দোষ নেই। গ্রামবাসীরা হয়ত গিয়েছেন, এটা ঠিকই। কারণ, তাঁদের ক্ষোভ কোথায় গিয়ে মেটাবেন? এদিকে আশাকর্মীরাও নিরুপায়। তাঁদের দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা গ্রামবাসীদের বলব, আপনারা পঞ্চায়েতে যান, বিডিও অফিসে যান, সেখানে গিয়ে চাপ তৈরি করুন। কারণ, আশাকর্মীদের কিছু করার নেই, তাঁরা নিরুপায়।”

বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলছেন, “সরকারিভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার জন্য বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন সরকারি কর্মীরা। এর মধ্যে যাঁরা এই ধরনের আচারণ করছেন, সরকারের কাজে বাধা দিচ্ছে, সবটার উপরেই আমরা নজর রাখছি। পুলিশকেও বলেছি, বিষয়টি নজরে রাখতে। সরকারি কাজে যাঁরা বাধা দিচ্ছে, তাঁরা নিশ্চিতভাবে উন্নয়ন চাইছেন না। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে একশো দিনের কাজের টাকা, বাড়ির টাকা বন্ধ করে রেখেছিলেন, পিছন থেকে তাঁরাই চক্রান্ত করছেন। এই চক্রান্তের উৎস আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours