ব্যক্তিগত ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একটি সাঁতারের পোশাকে ছবি পোস্ট করার জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে কলকাতার জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপককে। সেই ঘটনার কয়েক মাস কেটে গেলেও ভয়ে ভয়ে রয়েছেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন তিনি এবং কয়েক মাস ধরেই বেকার তিনি। তাঁর আরও দাবি, এই ঘটনা পরিবারকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও আইনি লড়াই করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁর বিরুদ্ধে ৯৯ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে। অধ্যাপিকার ‘অশ্লীল ছবি’ দেখেছে পড়ুয়া, এই মর্মে ছাত্রের বাবা অভিযোগ করার পরে তাঁকে চাকরি ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল অধ্যাপককে।

অধ্যাপিকার দাবি, ছবিগুলি ‘স্টোরি’ হিসাবে আপলোড করা হয়েছিল। তাঁর দাবি, ছবিগুলি কীভাবে ফাঁস হয়েছে তা তিনি জানেন না। “কেউ একটি স্ক্রিনশট নিয়েছে এবং ছবিগুলি প্রচার করেছে,” দাবি অধ্যাপিকার। তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের কাছে বিষয়টি ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেও কেউ তাঁকে বিশ্বাস করেননি। অধ্যাপিকা জানান, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগেই ছবিগুলি আপলোড করেছিলেন। “কর্তৃপক্ষের খুঁজে বের করা উচিত ছিল কীভাবে ছাত্রটি সেই ছবিগুলি দেখতে পেয়েছে, পরিবর্তে তাঁরা আমার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে,” বলেন প্রাক্তন অধ্যাপিকা।

২০২১ সালের অক্টোবর মাসে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়, তবে ভয়ে তিনি এখনও নিজের নাম বা অবস্থান জনসাধারণের কাছে প্রকাশ করতে প্রস্তুত নন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজ ১৮ এর সঙ্গে এক্সক্লুসিভ এক সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক বলেন, “আমি অগাস্টে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে আমি সাঁতারের পোশাকে ছবি আপলোড করেছিলাম যা আইনত ভুল নয়।”


অভিভাবকদের অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় একটি কমিটি গঠন করে বিষয়টি তদন্ত করে। “আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় গঠিত কমিটির সামনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। তাঁরা আমাকে আমার ছবি দেখান, আমার অনুমতি ছাড়াই আমার ছবির প্রিন্টআউট নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেন এগুলি আমার ছবি কিনা এবং আমি আদৌ সচেতন কী না যে এই ছবিগুলি কীভাবে পড়ুয়াদের প্রভাবিত করতে পারে?”

“তাঁরা আমাকে ৭ অক্টোবর বরখাস্ত করে। আমাকে উত্তর দেওয়ার জন্যও কোনও সময় দেওয়া হয়নি। ৮ অক্টোবর উপাচার্যের সঙ্গে আমার সরাসরি কথা হয়। তিনি আমার বিরুদ্ধে এফআইআর করার হুমকি দেন,” বলেন অধ্যাপিকা। “তাঁরা আমাকে বৈঠকের কার্যবিবরণী দেননি। বিশাখা নির্দেশিকা অনুসরণ করেননি। যখন আমি তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে আইনি চিঠি পাঠাই তাঁরা আমার নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করেন এবং ৯৯ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেন,” বলেন তিনি।


“আমি কোন নিয়ম লঙ্ঘন করেছি? আমাকে নিয়োগ করার আগে কেন সোশ্যাল মিডিয়া মূল্যায়ন করেনি কর্তৃপক্ষ?” প্রশ্ন অধ্যাপিকার। প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপিকা আরও জানান, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী বাবা-ছেলে কে ছিল সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণা নেই।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours