ওই বাড়িতে স্বামী স্ত্রীর অশান্তি হত নিত্য। সে কথা জানতেন প্রতিবেশীরা। শনিবার সন্ধ্যাতেও হয়েছিল। তাই বিশেষ আমল দেননি। কিছুক্ষণের মধ্যে স্তব্ধও হয়ে যায় সব কিছু। কিন্তু আচমকাই ওই ঘরের ভিতর থেকে গোঙানির শব্দ শোনা গিয়েছিল। সেটা শুনেই ঘরে ঢোকেন প্রতিবেশীরা।

দেখেন মেঝেতে চাপ চাপ পড়ে রক্ত। দুটো শরীর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে। রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত ছোট্ট শরীরটাও। পাশেই পড়ে বছর পঁয়ত্রিশের যুবক। মুখ দিয়ে গ্যাজলা বেরোচ্ছে। বাকি দুজনের শরীরে প্রাণ নেই বুঝতে পেরেই প্রথমে যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান স্থানীয়রা। জানা যায় চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে খুন করে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন যুবক। মর্মান্তিক ঘটনা পুরুলিয়ার কাশীপুরের রাঙ্গাডি গ্রামে। গৌতম মাহাতো নামে ওই যুবক এখন হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতম সেভাবে কাজ করতেন না। সংসারে আয় ছিল কম। এদিকে, বদমেজাজি গৌতমের সঙ্গে প্রায়ই তাঁর স্ত্রীর ঝামেলা হত। শনিবার রাতেও তাই হয়েছে। তারপর সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। এরপরই গভীর রাতে সে ঘরে ঢুকে কুড়ুল দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে বলে অভিযোগ। সন্তানকে নিয়ে তখন ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। আকস্মিক হামলায় সেভাবে প্রতিরোধও করতে পারেননি। আর বাচ্চাগুলোর প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও নেই। ফলে বিনা বাধাতেই কুপিয়ে নিজের সন্তান স্ত্রীকে খুন করে গৌতম। অভিযোগ তেমনই। পুলিশের দাবি, প্রাথমিকভাবে তেমনটাই জানা গিয়েছে।

স্ত্রী ও সন্তানদের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর বিষ খায় গৌতম। কিন্তু ততক্ষণে প্রতিবেশীরা চলে আসেন। তাকে কাশীপুর কল্ললি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। দেহগুলি পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কেন সে এই কাজ করল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। অপেক্ষা করা হচ্ছে গৌতম সুস্থ হওয়া পর্যন্ত। এরপর তাকে জেরা করা হবে। প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, স্ত্রীকে নিয়ে সন্দেহ করত গৌতম, তা থেকেই এই ঘটনা কিনা, তা দেখা হচ্ছে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours