করোনার (Covid 19) তৃতীয় ঢেউয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় রোজই গড়ে ১২ থেকে ১৪ জন শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (Midnapore Medical College and Hospital) শিশুদের জন্য পৃথক কোভিড ওয়ার্ড চালু করা হল।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে ভর্তি রয়েছে ৩ জন শিশু। আক্রান্ত আরও প্রায় ৪০ জন শিশু। তাদের অবশ্য বাড়িতে রেখেই চিকিত্‍সা চলছে। এদিকে আবার হাসপাতালের শিশুবিভাগের ১১ জন চিকিত্‍সক সহ ৬০ জন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী ইতিমধ্যেই করোনায় (Coronavirus) সংক্রামিত। তাঁরা হোম আইসোলেশন রয়েছেন। ফলে শিশুবিভাগে চিকিত্‍সক ও নার্সেরও ঘাটতি রয়েছে। এখন হাসপাতালে ভর্তি শিশুর সংখ্যা যদি বাড়ে আর সংক্রামিত চিকিত্‍সক-নার্সের সংখ্যাও যদি বাড়ে, তাহলেই সমস্যা দেখা দেবে। আর তা নিয়েই রীতিমতো চিন্তায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (Midnapore Medical College and Hospital) শিশুবিভাগের বিভাগীয় প্রধান তথা আইএমএ-র মেদিনীপুর শাখার সভাপতি তারাপদ ঘোষ বলেন, "সংক্রামিত শিশুদের বেশিভাগেরই জ্বর, সর্দির মতো উপসর্গ থাকছে। তবে আশার বিষয় দ্বিতীয় ঢেউয়ের মত এবার সেভাবে কারও আশঙ্কাজনক অবস্থা হচ্ছে না। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক দিক। তবে ইতিমধ্যেই মেদিনীপুর মেডিক্যালে সংক্রামিত শিশুদের জন্য ৫০ শয্যার পৃথক কোভিড ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। তার মধ্যে ২৫ শয্যার অক্সিজেন যুক্ত কোভিড জেনারেল শয্যা। আর বাকি ২৫ শয্যার ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিট। সেটাও দু-একদিনের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাবে।" তিনি জানান, যে ৩ শিশু এই মুহূর্তে শিশু কোভিড ওয়ার্ডে ( (Covid Ward) চিকিত্‍সাধীন রয়েছে, তাদের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল।

প্রসঙ্গত, চিকিত্‍সকদের একাংশের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, পরিজনদের থেকেই সংক্রামিত হচ্ছে শিশুরা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নারায়ণগড়ে ৬ মাসের এক শিশু সংক্রামিত হয়েছে। অন্যদিকে ঘাটালে ২ বছরের একটি শিশুর শরীরেও সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তার পাশাপাশি খড়গ্পুর গ্রামীণে ৪ বছরের ও পিংলায় ৫ বছরের একটি করে শিশু সংক্রামিত হয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েকদিনে ১৮ বছরের নীচে আক্রান্ত হয়েছে ৪৯ জন। যার মধ্যে আবার ১০ বছরের নীচে রয়েছে ১৫ জন। পরিস্থিতি যা যদি আগামীদিনে মানুষ সচেতন না হয়, তাহলে শিশুদের সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন চিকিত্সকদের একাংশ। তেমনই ডাক্তার-নার্সরা অধিক সংখ্যায় আক্রান্ত হলে, চিকিত্‍সা পরিষেবা ব্যাহত হওয়ারও আশঙ্কা থাকছে।

যদিও জেলা প্রশাসনের দাবি, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা বেশি সংক্রামিত হতে পারে, বিশেষজ্ঞদের সেই সতর্কতাবাণীকে মাথায় রেখেই পরিস্থিতি সামলাতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যালে শিশুদের পৃথক কোভিড ওয়ার্ড তৈরি তারই অঙ্গ। এপ্রসঙ্গে জেলাশাসক ডা. রেশমি কোমল বলেন যে, সব হাসপাতালেই কোভিড রোগীদের জন্য শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours