২০ মাস পর খুলল স্কুল। কোভিডের লড়াইয়ে বিধি মানার চ্যালেঞ্জ শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী থেকে শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যেও। প্রথম দিন প্রায় ৭২ শতাংশ হাজিরা নিয়ে সচল নবম থেকে দ্বাদশ। যদিও শিফট ভাগ করে অর্ধেক পড়ুয়াদের নিয়ে ক্লাস চললেও কোভিড বিধি পালনে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে বহু স্কুল কিংবা কলেজে।

হাসি হাসি মুখ নিয়ে স্কুলে পা পড়ুয়াদের, তবে কোথাও যেন লুকিয়ে অন্ধকার। কোভিডে অর্থ সঙ্কটের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে একদল কিশোর যেন লড়াই করে চলেছে অনবরত। ব্যস্ত দুহাতে ফের বই খাতা কলম ফেরানোই এখন চ্যালেঞ্জ।

দেড়বছর পর তালামুক্ত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি। স্কুল-মামলা খারিজ হয়ে গিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। স্কুল খোলার বিষয়ে আপাতত হস্তক্ষেপ করতে নারাজ হাইকোর্ট। জনস্বার্থ মামলার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব।

১৬ নভেম্বর থেকে খুলেছে স্কুলের দরজা। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা স্কুলে যাবে। এরপর ধাপে ধাপে বাকিদেরও ক্লাস চালু হবে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই রাজ্যের শিক্ষা দফতর জেলাগুলিতে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কী ভাবে স্কুল খুলতে হবে।

মাঝে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আসার পর নবম থেকে দ্বাদশের ক্লাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। সেই সময় রাজ্যের তরফে গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়। এবারও একই গাইডলাইন প্রকাশ করা হল। মূলত এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, প্রত্যেক ছাত্র ছাত্রীকে মাস্ক পরে স্কুলে আসতে হবে। সেই মর্মে বিদ্যালয়গুলিকে নোটিস জারি করতে হবে। এছাড়াও প্রতিটি স্কুলে একটি শয্যাযুক্ত আইসোলেশন রুম রাখতে হবে। আচমকা যদি কেউ অসুস্থ হয়ে পড়ে, তাকে যেন সেখানে স্থানান্তরিত করা যায়।

পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষিকাদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও উল্লেখ রয়েছে এই স্কুল রিওপেন বুকলেটে। যাতে কারও জ্বর এলে বা অসুস্থ হলে প্রাথমিক ভাবে তা সামাল দিতে পারেন স্কুলে স্যার, দিদিমণিরা। আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েরও উল্লেখ রয়েছে এই গাইডলাইন বুকে। বার বার শিক্ষাবিদ বা চিকিত্‍সকরা যেটা বলছিলেন, সম্ভব হলে দুই শিফটে ক্লাস হোক। এখানেও বলা হয়েছে, পরিস্থিতি ও পরিকাঠামোর দিকে নজর রেখে প্রয়োজনে স্কুল দুই শিফট অর্থাত্‍ মর্নিং ও ডে'তে ক্লাস করাতে পারে।

করোনার বিষয়ে অভিভাবক ও পড়ুয়াদের সতর্ক করার দায়িত্বও স্কুলকেই দিয়েছে রাজ্য। করোনা সম্পর্কে অবহিত হতে হবে। কী করা যাবে এবং কী করা যাবে না সে বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। 'ডু অ্যান্ড ডোন্টস'-এরও একটি তালিকা রয়েছে বিকাশ ভবনের স্কুল রিওপেন বুকলেটে। সেখানে বলা হয়েছে, জ্বর হলে কোনও অভিভাবক যেন পড়ুয়াকে স্কুলে না পাঠান।

লকডাউনে জরাজীর্ণ স্কুলে কীভাবে পঠনপাঠন? জেলায় জেলায় এখনও সেই দুশ্চিন্তা রয়েছে। স্কুল খোলার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি কতটা কার্যকর হয়েছে, তা বোঝা যাবে স্কুল খোলার পরেই।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours