বিধায়ক না হয়েই মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন দু'জন। প্রথম জন বিজেপি-র সাংসদ ছিলেন। মাস চারেক আগে যিনি বসেন উত্তরাখণ্ডের মসনদে। দ্বিতীয় জনের নেতৃত্বাধীন দল দু'মাস আগে এ রাজ্যে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেছে। কিন্তু তিনি নিজে জিততে পারেননি। প্রথম জন শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। এই ইস্তফার জেরে নৈতিকতার প্রশ্নে কী চাপ বাড়ল দ্বিতীয় জনের উপর?

প্রথম জন হলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তীরথ সিংহ রাওয়াত। শুক্রবার রাতে ইস্তফা দেওয়ার পর যিনি ওই পদে প্রাক্তন হয়েছেন। দ্বিতীয় জন পশ্চিমবঙ্গে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিধানসভায় জিতে না এসে রাজ্যের কর্ণধার হলে, উপনির্বাচনে জিতে আসতে হবে ছ'মাসের মধ্যে। এটাই নিয়ম। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের যুক্তিতে দেশে এই মুহূর্তে ভোট করাতে দ্বিধাগ্রস্ত নির্বাচন কমিশন। ইস্তফা দেওয়ার পর তীরথ বলেছেন, ''করোনার কারণে এখন উপনির্বাচন সম্ভব নয়। রাজ্যে সাংবিধানিক সঙ্কট হতে পারে। সে কথা মাথায় রেখে নৈতিক কারণে ইস্তফা দিয়েছি।'' ঠিক এখানেই রাজনৈতিক মহলের একাংশর মতে, তীরথের এই ইস্তফার মাধ্যমে কি ঘুরপথে মমতার উপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইল কেন্দ্রের শাসকদল?

মুখে নৈতিকতার কথা বললেও, উত্তরাখণ্ডে বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ বিবাদ থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন তীরথ। যে জন্য ত্রিবেন্দ্র রাওয়াতকে সরিয়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি, সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি বলেই তাঁকে সরানো হয়েছে বলে খবর। উত্তরাখণ্ডে আগামী বছরের শুরুতেই ভোট।

তীরথকে সরিয়ে মমতাকে বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি? এ ব্যাপারে এক বিজেপি নেতা বলেছেন, ''নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর মুখ্যমন্ত্রী হওয়াই উচিত নয়। কিন্তু মমতা হয়েছেন। ভোট হওয়া যে হেতু সম্ভব নয়, তাই তীরথকে সরিয়ে অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করার কথা ভাবছে বিজেপি। মমতারও উচিত নৈতিকতার কারণে আপাতত সরে যাওয়া।''

যদিও তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই চাপের কথা মানতে নারাজ। তাঁদের মতে উত্তরাখণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি মোটেই এক নয়। এ ব্যাপারে তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেছেন, ''দুই রাজ্যের পরিস্থিতির তুলনাই চলে না। উত্তরাখণ্ডে আগামী বছরের গোড়াতেই ভোট। তাই এত কম সময়ের জন্য এই করোনা আবহে উপনির্বাচন করায় অনীহা থাকতে পারে। কিন্তু সদ্য মে-তেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। তাই সেখানে উপনির্বাচন না করার যুক্তি নেই।''

কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় রাজ্যে পুরোদস্তুর ভোট করানো গেলে এখন যখন কোভিডের প্রকোপ তুলনায় অনেকটা কম, তখন কেন কয়েকটি আসনের উপনির্বাচন সেরে ফেলা হবে না? এই প্রশ্নই নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলেছে তৃণমূল। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বিজেপি-র অঙ্গুলিহেলনে কমিশন গড়িমসি করছে বলে প্রশ্নও তুলেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে কমিশন কী পদক্ষেপ করে সে দিকেই নজর দেশের রাজনৈতিক মহলের।

Dailyhunt
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours