উড়ন্ত শিখ' নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন। রোম অলিম্পিকে মাত্র ০.১ সেকেন্ডের জন্য ব্রোঞ্জ পদক জিততে পারেননি। সেই মিলখা সিং (Milkha Singh) আর নেই। শরীরে কোভিড থাবা বসানোর ৩০ দিনের মাথায় প্রয়াত হলেন 'পদ্মশ্রী' মিলখা।মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯১। বাবার চলে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ছেলে জিভ মিলখা সিং। কিংবদন্তি অ্যাথলিটের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ক্রীড়াজগত। শোকজ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।

গত ২০ মে কোভিড (CoronaVirus) আক্রান্ত হয়েছিলেন মিলখা। তাঁর বাড়ির দুই পরিচারক করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। বাড়ির অন্যান্যদের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এলেও, মিলখার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়িও ফিরে এসেছিলেন।করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পরও বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন মিলখা। এর মধ্যেই দিন পাঁচেক আগে স্ত্রী নির্মল কৌর প্রয়াত হন।তিনিও কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন।বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন মিলখা। রক্তে কমে যায় অক্সিজেনের মাত্রা। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে ছিল জ্বর। চণ্ডীগড়ের একটি হাসপাতালের আইসিইউ-তে রাখা হয় তাঁকে। শুক্রবার সন্ধে থেকে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। শেষপর্যন্ত আর যুঝতে পারেনি তাঁর শরীর।

পাঞ্জাবের গোবিন্দপুর গ্রামে হতদরিদ্র এক পরিবারে মিলখার জন্ম। দারিদ্র্য এতটাই যে অন্য কিছু ভাবার অবকাশ কারও ছিল না। কোনওভাবে বেঁচে থাকাটাই ছিল বড় ব্যাপার। ১৯৫৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসে দেশকে সোনার পদক এনে দেন মিলখা। রোম অলিম্পিকের (১৯৬০) ফাইনালে উঠেছিলেন। ফোটো ফিনিশে অল্পের জন্য অলিম্পিক পদক হাতছাড়া হয় তাঁর। কিন্তু ৪০০ মিটারে তাঁর সেই দৌড় ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সকে পৌঁছে দিয়েছিল এক অন্য উচ্চতায়। এশিয়ান গেমস থেকে জেতেন চার-চারটি সোনা।

মিলখার জীবন নিয়ে পরবর্তীকালে তৈরি হয় বায়োপিক 'ভাগ মিলখা ভাগ' । মিলখার ভূমিকায় অভিনয় করেন ফারহান আখতার। সেই ছবিতে দেখানো হয়, দেশভাগের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় কিশোর মিলখার চোখের সামনেই মেরে ফেলা হচ্ছে মা-বাবা এবং ভাইবোনদের। জীবনের শেষ মুহূর্তের ঠিক আগে মিলখার বাবা চিত্‍কার করে বলেন, 'ভাগ মিলখা ভাগ'। জীবন বাঁচাতে দৌড় শুরু করেন মিলখা। সেই দৌড় থেমে গেল শুক্রবার।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours