সুশান্ত সিংহ রাজপুতের রহস্যমৃত্যুতে ফের চাঞ্চল্যকর মোড়। এ বার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নারায়ণ রাণে দাবি করলেন, অভিনেতা সুশান্ত এবং তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দু’জনকেই খুন করা হয়েছে।
দিশাকে খুনের আগে ধর্ষণ করা হয়েছিল। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নাকি তাঁর যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্নও আছে, দাবি রাণের। বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, মুম্বই পুলিশ দু’টি ঘটনার যথার্থ তদন্ত না করে এই ষড়যন্ত্রে শক্তিধরদের গোপন করছে।
সুশান্তের প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা তাঁর ববা মায়ের সঙ্গে থাকতেন মুম্বইয়ের দাদারে। গত ৮ জুন রাতে তিনি কয়েক জন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে গিয়েছিলেন মালাড ওয়েস্টের একটি ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাটের মালিক দিশার প্রেমিক, অভিনেতা রোহন রাই।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, রাতে খাওয়াদাওয়ার পরে বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করেছিলেন দিশা। রাণের দাবি, এই পার্টিতে কে কে হাজির ছিলেন, তাঁদের সবার নাম প্রকাশ করতে হবে। এমনকি, ওই মজলিসে মহারাষ্ট্রের এক জন প্রভাবশালী মন্ত্রীও ছিলেন বলে অভিযোগ রাণের।
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাত একটা নাগাদ সুরাসক্ত অবস্থায় ১২ তলা ফ্ল্যাটের খোলা জানালা দিয়ে নীচে পড়ে যান দিশা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয় রাত আড়াইটে নাগাদ। সে সময় খোলা রাস্তায় রক্তের স্রোতে পড়েছিলেন তরুণী। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
প্রবীণ রাজনীতিক রাণের দাবি, দিশা এবং সুশান্তের মৃত্যুর ঘটনার মধ্যে সম্পর্ক আছে। গত ১৪ জুন দুপুরে মুম্বইয়ে নিজের ফ্ল্যাটে উদ্ধার হয় সুশান্তের ঝুলন্ত দেহ। তার আগের দিন রাতে সেখানে পার্টি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। রাণের দাবি, সেই পার্টিতে কারা কারা হাজির ছিলেন, সে তথ্যও সামনে আসা প্রয়োজন।
মাত্র ছ’দিনের ব্যবধানে প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা এবং সুশান্তের রহস্যমৃত্যু, দু’টি ঘটনাই যে একটি অন্যটির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, সে দাবি প্রথম থেকেই উঠেছে। এই প্রশ্নও উঠছে, তা হলে কি সুশান্ত জানতেন দিশার পরিণতি কী হয়েছিল? সত্যিটা জানতেন বলে কি তাঁকেও সরিয়ে দেওয়া হল?
দিশার মৃত্যুতে কিছু গোপন করা হচ্ছে, সে আশঙ্কা আরও জোরালো হয়েছে বিহার পুলিশের দাবিতে। সুশান্ত এবং দিশার মৃত্যুর ঘটনায় মুম্বই এসেছে বিহার পুলিশের একটি দল। তদন্তকারীদের দাবি, মালওয়ানি থানায় গিয়ে তাঁরা দিশার কেসফাইল দেখতে চান। কিন্তু তাঁদের জানানো হয়, কেস ভুলবশত ডিলিট হয়ে গিয়েছে।
ফাইল পুনরুদ্ধারের জন্য চাওয়া হয় ল্যাপটপ। কিন্তু সেটাও তাঁদের দেওয়া হয়নি বলে দাবি বিহার পুলিশের। ফলে সন্দেহ জোরালো হচ্ছে যে মুম্বই পুলিশ কাউকে আড়াল করতে চাইছে। নইলে এত ফাইলের মধ্যে একটা নির্দিষ্ট ফাইল-ই বা হারিয়ে গেল কেন?
বিহার পুলিশের অভিযোগ, তদন্তে তাদের সাহায্য করছে না মুম্বই পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ার দাবি, বিহার পুলিশ ময়দানে না এলে দিশা ও সুশান্ত, দু’জনের মৃত্যুকেই ‘আত্মহত্যা’-র তকমা দিত মুম্বই পুলিশ।
তা ছাড়া, দিশার বাবা-মায়ের সঙ্গেও কথা বলতে পারেননি বিহার পুলিশ। কারণ তাঁরা বাড়িতেই ছিলেন না। ফলে এই আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে যে, মহারাষ্ট্রের এক তরুণ রাজনীতিককে আড়াল করতেই মুম্বই পুলিশ এ ভাবে কেস সাজাচ্ছে।
সুশান্ত সিংহ রাজপুত এবং দিশা সালিয়ান, এই দুই রহস্যমৃত্যুতে এ বার কাঠগড়ায় মুম্বই পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, মহারাষ্ট্রের শাসক দলের অঙ্গুলিহেলনেই এগোচ্ছে মুম্বই পুলিশ। সর্বতোভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে রাজ্যের তরুণ মন্ত্রীকে আড়াল করার।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours