উৎসবের মরসুমেই দেশের বাইরে বন্দী ১৪ জন শ্রমিক। পরিবারের কেউ এখনও সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। কেবল পোস্ট দেখেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যোগাযোগ না করতে পেরে, কুলতলির পরিবারগুলিতে এখন হাহাকার

মাছ ধরার সময় গভীর সমুদ্রে ভারতীয় জল সীমানা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ার অভিযোগে বাংলাদেশের নৌ বাহিনীর হাতে আটক ভারতীয় একটি ট্রলার। ওই ট্রলারের মধ্যে রয়েছেন ১৪ জন মৎস্যজীবী। ১৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করেছে বাংলাদেশের উপকূল রক্ষী বাহিনী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁরা সকলেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। কুলতলির শানকিজাহান গ্রামের ১৪ জন মৎস্যজীবীই এখন বাংলাদেশে বন্দি। 

বর্ষার রোষ কমেছে। গত কয়েকমাসে বারে বারে মৎসজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল। তারপরে, গত ১৩ অক্টোবর, সোমবার 'এফবি শুভযাত্রা' নামে একটি ট্রলার নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যান তাঁরা। জানা গিয়েছে, গত শনিবার গভীর সমুদ্রে ট্রলারের ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ে। সেই পরিস্থিতিতে সমুদ্রে ভেসে থাকা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। উত্তাল সমুদ্রে ট্রলারটি ভাসতে ভাসতে একসময় ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের জলসীমায়। সীমান্ত অতিক্রম করার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রলারটিকে আটক করে প্রতিবেশী দেশের উপকূলরক্ষী এবং সেনা, সূত্রের খবর তেমনটাই।

মৎস্যজীবীদের আটক হওয়ার খবর তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা জানতে পারেন সমাজমাধ্যম থেকে। ফোনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁরা। তবে আটক হওয়ার ছবি এবং ওই সম্পর্কিত বিভিন্ন পোস্ট সমাজমাধ্যমে ঘুরতে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা, প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত তথ্য তেমনটাই।
 এ বিষয়ে সুন্দরবন ফিশারম্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক সতীনাথ পাত্র জানান, 'গত ১৩ই অক্টোবর দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কুলতলী এলাকা থেকে এফবি শুভযাত্রা নামে একটি মাছ ধরার ট্রলার ১৪ জন মৎস্যজীবীদের নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার সময় ভারতীয় জল সীমানা লঙ্ঘন করে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করে। এরপর বাংলাদেশের নৌবাহিনী ও সেনারা ওই ট্রলার সহ ১৪ জন মৎস্যজীবীদেরকে আটক করে। ১৪ জন মৎস্যজীবীদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের মামলা রুজু করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি জানার পর আটক হওয়া মৎস্যজীবী পরিবারদের পক্ষ থেকে এবং ফিশারম্যান শ্রমিক ইউনিয়ন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের নজরে এই বিষয়টি আনা হয়েছে।' একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, 'দুই দেশের সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতা করে খুব শীঘ্রই বাংলাদেশে আটক হওয়া মৎস্যজীবীদের কে দেশে ফেরানো হবে সে বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য সরকার।' প্রতিটি পরিবারের একমাত্র কিংবা প্রধান উপার্জনকারী বাংলাদেশে বন্দি। স্বাভাবিকভাবেই উৎসবের আবহে দুশ্চিন্তায় কুলতলির ওই গ্রাম।

স্টাফ রিপোর্টার মুন্না সরদার
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours