দলনেত্রীর চক্ষুশূল হওয়া কেষ্ট কি এবার অভিষেক শরণে? উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ অফিসারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার কারণেই কি দূরত্ব তৈরি করল দল?
একুশের সমাবেশে উধাও কেষ্ট, তারপরই ফেসবুক পোস্ট, বাড়ছে জল্পনা
জেলার নেতা হলেও তৃণমূলে বরাবরই গুরুত্ব ছিল অনুব্রত মণ্ডলের। এমনকী তিনি জেলে যাওয়ার পরও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোনা যেত কেষ্টর নাম। আর সেই অনুব্রতকে একুশের মঞ্চের কাছে ঘেঁষতেই দেওয়া হল না। ২০ জুলাই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সোমবার সভাস্থলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এরপরই ফেসবুকে কিছু ছবি পোস্ট করেন অনুব্রত, তা ঘিরেই বেড়েছে জল্পনা।
অনুব্রতর ফেসবুক পোস্টে তাঁর নেত্রীর ছবি ৭টি, আর অভিষেকের ছবির সংখ্যা ৯টি। একসময় মমতা ছাড়া কাউকে মানেন না বলে দাবি করতেন যে কেষ্ট মণ্ডল, তাঁর ফেসবুক পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তো উঠবেই। সদ্য দলনেত্রীর চক্ষুশূল হওয়া কেষ্ট কি এবার অভিষেক শরণে? উঠছে প্রশ্ন। পুলিশ অফিসারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার কারণেই কি দূরত্ব তৈরি করল দল?
২০ জুলাই, বিকেলে দেখা চাঁদের মতোই ফুটে উঠেছিলেন অনুব্রত। তারপরই মেঘে ঢেকে গেলেন। একুশের সমাবেশ জুড়ে যখন ঝাঁঝালো রোদ, তখনও মেঘ সরল না। আগের দিন বিকেলে সভাস্থল থেকে সেই যে উধাও হলেন, পরের দিন আর কোথাও দেখা গেল না বীরভূমের একদা বেতাজ বাদশাকে।
মঞ্চে তখন কাজল শেখ সহ বীরভূমের কোর কমিটির সদস্যরা সি গ্রিন রঙের পঞ্জাবি পরে সভার ভিড় উপভোগ করছেন। কিন্তু কোথায় কেষ্ট? ভিড়ে কোথাও নেই তিনি। শেষে রাতে দেখা গেল তাঁর ফেসবুক পোস্ট। আর সেই পোস্টে ছবির সংখ্যায় মমতাকে ছাপিয়ে গেলেন অভিষেক।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের কাছে মমতা ও অভিষেক দুজনের ছবি শেয়ার করাই স্বাভাবিক রীতি। এতে অবাক করার মতো কিছুই নেই। কিন্তু কেস্ট তো চিরকালই ব্যতিক্রমী। তাই তাঁর পোস্টে কি অন্য কোনও ইঙ্গিত মিলেছে? তা নিয়ে বিশ্লেষণ হওয়াটাই স্বাভাবিক।
তিহাড় থেকে ফেরার পর বদলে গিয়েছে অনেক কিছুই। বীরভূমের আর সভাপতি হতে পারেননি অনুব্রত। এর মধ্যে আবার ফোন-কাণ্ড। পুলিশকে গালিগালাজ করার অভিযোগ। ক্ষমা প্রার্থনাও করেন কেষ্ট মণ্ডল। তারপর ২১ জুলাইতে জায়গা না পাওয়া। তাই কি এবার অভিষেক শরণ?
বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “ওকে দিয়ে টাকা তোলানো হল। আর আম খেয়ে ছিবড়ের মতো ফেলে দেওয়া হল! তৃণমূলের বাকিরাও দেখুন।” বাম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, “কাজের বেলায় কাজী- এটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। নেতাদের দিয়ে অন্যায় কাজ করানো হয়, তারপর ফেঁসে গেল কেউ কারও নয়।” তবে তৃণমূল এই ইস্যুতে কোনও জবাব দিতে চাইছে না। কাজল শেখকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অন্য কারও বিষয়ে জবাব দেব না। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম অনুব্রতর কথা শুনেই বলেন, “এটা কোনও ইস্যু নয়।”


Post A Comment:
0 comments so far,add yours