কাকদ্বীপের বীর জওয়ান অবসর নিয়ে ঘরে ফিরলেন, আনন্দে আত্মহারা এলাকাবাসী
ঘরের ছেলে, দেশের জওয়ান হয়ে ফিরলেন। তিন দশক পরে নিজ গ্রামে পা দিলেন জয়দেব জানা। শুধু গ্রামে ফেরাই নয়, সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন শত যুদ্ধের অভিজ্ঞতা, বুকভরা গর্ব আর না বলা বহু গল্প।
১৯৯৫ সালের ১৪ জুন, তখন বয়স কম, চোখে স্বপ্ন, আর বুকে দেশসেবা করার অঙ্গীকার। ইন্ডিয়ান আর্মিতে তখনই শুরু হয়েছিল জয়দেবের সফর। তারপর পেরিয়েছে ৩০টা বছর। কত রাজ্য, কত প্রান্ত, কত যুদ্ধ—সব কিছুর সাক্ষী তিনি। তবে বলা যায় না। "আমরা শপথ নিয়েছি, কিছু বলব না," চোখ নামিয়ে শুধু এটুকুই বললেন।
তবে তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে ‘কার্গিল। ভারতীয় সেনার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনে ছিলেন তিনি—‘অভি বিজয়’, ‘অভি পরাক্রম’-এর মতো গোপন মিশনের একজন নায়ক। শত্রুপক্ষের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে থেকেছেন চুপ করে, ঝড়, তুষারপাতে থেকেছেন পাহাড়চূড়ায়। তবু মুখে একটিও অহংকারের ছায়া নেই।
চাকরির শেষ পর্যায়ে ছিলেন মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে। বছরে কেবল কয়েকদিনের ছুটিতে ফিরতেন বাড়ি। পরিবার, সন্তানদের বড় করা—সবই হয়েছে এই দায়িত্বপূর্ণ জীবনের ছায়ায়। "চাকরি শুধু উপার্জনের মাধ্যম নয়, এটা ছিল দেশের প্রতি আমার ঋণ শোধ করার একটা পথ," বলেন জয়দেব।
২০২৫ সালের জুন মাসে সরকারি ভাবে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। আর তারপরই ফিরে আসেন নিজের বাড়িতে — কাকদ্বীপ বিধানসভার নারায়ণপুর গ্রামে। তাঁর গ্রামে ফিরে আসার খবরে যেন এক উৎসবের আবহ। বুধবার সন্ধেয় গ্রামের শতাধিক মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরেন। ফুলের মালা, উত্তরীয়, সম্মাননাপত্রে সজ্জিত হয় বীরের প্রত্যাবর্তন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours