প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে সেনাবাহিনীর উর্দি পরে এসে তাঁদের নাম জিজ্ঞাসা করা হয়। নাম জানার পর কে কোন ধর্মের জানতে চাওয়া হয়। এরপর মহিলা ও শিশুদের আলাদা করে দেওয়া হয়। এক জায়গায় জড়ো করা হয় পুরুষদের। এরপর মাথায় গুলি করা হয়।
ভারতীয় সেনা কিংবা জম্মু কাশ্মীর পুলিশ সেই মুহূর্তে প্রত্যাঘাত করতে পারবে না, নিশ্চিত ছিল জঙ্গিরা! কীভাবে পহেলগাঁওতে হামলার ছক, সামনে এল
পহেলগাঁওতে হামলার চার জঙ্গির ছবি এল প্রকাশ্যে। তাদের মধ্যে ২ জন পাকিস্তানি, ২ জন কাশ্মীরি। তাদের মধ্যে তিন জনের নামও জানা গিয়েছে ইতিমধ্যে। চার জনই লস্কর-ই তৈবা সংগঠনের সদস্য। তিন জঙ্গির নাম আসিফ ফৌজি, সুলেমান শাহ, আবু তালহা। কীভাবে জঙ্গি হামলা হয়?
হাতে এল সেই বিস্ফোরক তথ্য।
হামলার পর একটা বিষয় সম্পূর্ণ স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে এজেন্সির কাছে। প্রায় ২০ মিনিট ধরে হত্যালীলা চলেছে। হয়েছে গুলিবর্ষণ। গুলির শব্দ উপত্যকায় বহু দূর পর্যন্ত শোনা গিয়েছে। কিন্তু তারপরও দীর্ঘক্ষণ ধরে নির্বিঘ্নে তারা তাদের ‘মিশন সাকসেসফুল’ করেছে। এরপর সুনির্দিষ্ট রুট ধরে তারা বেরিয়ে চলে গিয়েছে। এই কাজ তখনই করা সম্ভব, যখন আগে থেকে রেইকি করা থাকে।
যে সময়ে নারকীয় হত্যালীলা চালিয়েছে জঙ্গিরা, তখন যে ভারতীয় সেনাবাহিনী কিংবা জম্মু কাশ্মীর পুলিশের তরফ থেকে কোনওরকমভাবে প্রত্যাঘাত আসবে না, সেই ব্যাপারটাও নিশ্চিত ছিল জঙ্গিদের কাছে। এক্ষেত্রে কয়েকটি স্তরে তারা কাজ করেছে। একদিকে যখন একটা টিম নারকীয় হত্যালীলা চালিয়েছে, তখন আরেকটি টিম বাইরে থেকে তাদের গার্ড করেছিল। তাদের অ্যালার্ট করেছে। জঙ্গিরা যে জ্যাকেট পরেছিল, তাতে বডি ক্যামেরা লাগানো ছিল। প্রতি মুহূর্তে একে অপরের সঙ্গে ওয়াকিটকিতে কথা বলছিল।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, প্রথমে সেনাবাহিনীর উর্দি পরে এসে তাঁদের নাম জিজ্ঞাসা করা হয়। নাম জানার পর কে কোন ধর্মের জানতে চাওয়া হয়। এরপর মহিলা ও শিশুদের আলাদা করে দেওয়া হয়। এক জায়গায় জড়ো করা হয় পুরুষদের। এরপর মাথায় গুলি করা হয়। জানা যাচ্ছে, যখন ভিতরে এই ঘটনা ঘটছিল, তখন বাইরে থেকে চলে এলোপাথাড়ি গুলি। ওই রিসর্ট সংলগ্ন জঙ্গল থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।
এজেন্সির মতে, এই ধরনের ঘটনা তখনই ঘটানো সম্ভব, যখন একটা টেরর মডিউলকে প্রতি মুহূর্তে কোনও স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী-সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি নরম মনোভাবাপন্ন কোন গোষ্ঠী প্ল্যাটফর্ম না দেয়। এই ঘটনার সঙ্গে এলাকার কতজন জড়িত, কারা মদত দিয়েছে, সেই সবটাই জানতে চাইছে এজেন্সি। ইতিমধ্যেই তিন জনের স্কেচ প্রকাশ্যে এসেছে। সামনে এসেছে চার জঙ্গির ছবিও। তবে তার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনার মুহূর্তের একজনের ফটোগ্রাফ সামনে এসেছে, যেটা তদন্তকারীদের আরও নাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ ওই জঙ্গি স্থানীয় যুবকের পোশাক পরেই রয়েছে। তার হাতেও একটা AK47 ছিল। ছদ্মবেশে জঙ্গিরা প্রত্যেকেই এলাকার মানুষের সঙ্গে বেশ কিছুদিন মেলামেশা করেছে। তাদের নাম ভাঁড়িয়েছে। আস্থা অর্জন করেছে। ভিড়ের মধ্যে মিশে থেকেই নারকীয় হত্যালীলাল গোটা প্ল্যান সাজিয়েছে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours