২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে নামে একদল লোক। সেই প্রতিবাদের নাম দেওয়া হয় 'কাশ্মীরি রেজিস্ট্যান্স'। সেই সময় পাক মদতকৃত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন একসঙ্গে মিলে টিআরএফ গঠন করে বলে খবর।


নাম জেনে ৩০ জনকে খুন করেছে এরা, জানুন কাশ্মীর হামলার পিছনে এই টিআরএফের ঠিকুজি-কুষ্ঠি


জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার পর শিরোনামে দ্য রেসিডেন্ট ফ্রন্ট। পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার দায়ও স্বীকার করেছে তাঁরা। টিআরএফ নামে পরিচিত এই সংগঠন হামলার দায় নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে কাশ্মীরে অবৈধভাবে বসতি গড়তে চাইলে উপত্যকায় এই ধরনের হামলা চলতেই থাকবে। ২০১৯ সালে গঠিত টিআরএফ অতীতেও সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যুক্ত। কী ভাবে তৈরি হল এই দল? এঁরা কারা?

দ্য রেসিডেন্ট ফ্রন্ট কী?

২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করা হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদে নামে একদল লোক। সেই প্রতিবাদের নাম দেওয়া হয় ‘কাশ্মীরি রেজিস্ট্যান্স’। সেই সময় পাক মদতকৃত জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবা এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন একসঙ্গে মিলে টিআরএফ গঠন করে বলে খবর।

ORF ম্যাগাজিন ২০২১ সালে TRF-এর উপর একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদন অনুসারে, এই সংস্থা প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ISI একটি বড় ভূমিকা পালন করেছিল। এই সংগঠনের নাম আইএসআই কর্মকর্তারা প্রস্তাব করেছিলেন।

টিআরএফ হল প্রথম সন্ত্রাসী সংগঠন যার নাম ইংরেজিতে দেওয়া হয়েছে। সাধারণত সন্ত্রাসী সংগঠনের নামে উর্দু বা ফারসি শব্দ ব্যবহার করা হয়। বলা হয়ে থাকে যে, বিশ্বের চোখ এড়াতে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ইংরেজি শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।

টিআরএফ কী ভাবে কাজ করে?

এই সংগঠনে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই সন্ত্রাসীদের প্রথমে সীমান্তের ওপারে নিয়ে যাওয়া হয় প্রশিক্ষণের জন্য। প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওতে হামলার পিছনেও পাক জঙ্গিদের হাত আছে বলে খবর। এরপর তাঁরা ফিরে আসে দেশে। জানা যায় ঘটনাটি ঘটানোর আগে টিআরএফ সন্ত্রাসীরা তাঁদের বাড়িতেই ছিল।

সিগন্যাল পাওয়ার পরই অপারেশনে বেরোয় তাঁরা। শুরু করে আক্রমণ। হামলার পর, পিছনে জঙ্গলে পালিয়ে যায় বলেই খবর।

যদিও এই রেসিডেন্ট ফ্রন্ট সংগঠনটি শেখ সাজ্জাদ গুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তবে এর কোনও প্রধান বর্তমানে নেই। সংগঠনে একটি কমান্ডার সিস্টেম আছে, যারা জোন অনুযায়ী কাজ করে। সূত্রের খবর, টিআরএফের সকল কমান্ডার কেবল পাকিস্তান থেকে নির্দেশ পান।

২০২২ সালের পর, ভারত সরকার জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের অর্থায়নের উপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার প্রভাব এই সংগঠনটির উপরও পড়ে। গ্রেটার কাশ্মীর সংবাদপত্র ২০২৩ সালে এনআইএ-র বরাত দিয়ে তাদের তহবিল সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।

সেই প্রতিবেদন অনুসারে, সংগঠনটি পাকিস্তান থেকে টাকা না পেলে এর শীর্ষ কর্মকর্তারা নিজেদের জমি বিক্রি শুরু করেন। ২০২৩ এবং ২০২৪ সালে, সংগঠনের কমান্ডার তাঁদের পৈতৃক সম্পত্তি বিক্রি করে বাকিদের টাকা দিয়েছিলেন।

সংগঠনের সন্ত্রাসীদের অর্থ প্রদানের দুটি উপায় রয়েছে। টিআরএফ-এর সঙ্গে কাজ করা সন্ত্রাসবাদীদের মাসিক ভিত্তিতে বেতন দেওয়া হয়। টিআরএফ-এর গুপ্তচররা তাঁদের কাজ অনুসারে বেতন পান।

টিআরএফ সন্ত্রাসীরা প্রায়ই হিন্দু, পর্যটক এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপর আক্রমণ করে থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন টিআরএফ সন্ত্রাসবাদীরা দ্রুত খ্যাতি অর্জনের জন্য এই কৌশল অবলম্বন করে।

প্রসঙ্গত এখানে বলে রাখা ভাল, পহেলগাঁওয়ের জঙ্গি হামলায় লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে সঙ্গেই জইশ-ই-মহম্মদ যুক্ত ছিল বলে খবর সূত্রে। এই দিন হামলায় ৫-১০ জঙ্গি যুক্ত থাকতে পারে। গোয়েন্দা সূত্রেও খবর এই টিআরএফ আসলে লস্কর-ই-তইবার একটি শাখা সংগঠন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours