একাধিক বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে 'ভূত'দের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে, যারা আদতে কোনওদিন মহল্লা ক্লিনিকে যান-ই নি। ল্যাব ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, যেখানে রোগীদের নাম ও মোবাইল নম্বর থাকত, তাতেও তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। মনগড়া নাম ও ফোন নম্বর বসিয়ে নানা পরীক্ষার নামে সরকারের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে প্রাইভেট ল্যাবগুলি।

রক্ত পরীক্ষা করিয়েছে ৬৫ হাজার 'ভূত'! এবার চিকিৎসাতেও দুর্নীতির খোঁজ
দিল্লির মহল্লা ক্লিনিকেও দুর্নীতি?

নয়া দিল্লি: কখনও শিক্ষা তো কখনও নিয়োগ! নিত্যদিন খোঁজ মিলছে নতুন নতুন দুর্নীতির। এবার চিকিৎসা ক্ষেত্রেও মিলল দুর্নীতির খোঁজ। দিল্লি সরকার পরিচালিত মহল্লা ক্লিনিকের আর্থিক হিসাবেই মিলল ব্যাপক দুর্নীতির হদিস। দেখা গেল, ২০২৩ সালে ১১ মাসে মহল্লা ক্লিনিকের অধীনে বিভিন্ন প্রাইভেট ল্যাবরেটরি থেকে রক্ত পরীক্ষা করিয়েছেন ৬৫ হাজার রোগী, যাদের বাস্তবে কোনও অস্তিত্বই নেই। এই ভূত রোগীদের মাধ্যমেই বিপুল আর্থিক তছরুপ হয়েছে। শনিবার অ্যান্টি-কোরাপশন ব্রাঞ্চের প্রাথমিক তদন্তেই উঠে এল এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।


তদন্তে জানা গিয়েছে, দিল্লির দুটি প্রাইভেট ল্যাবরেটরিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ২২ লক্ষ প্যাথোলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৫ হাজার রোগীর তথ্যই ভুয়ো। এদিকে, এই পরীক্ষা করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফে ৪.৬৩ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে।

সম্প্রতিই দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর ভিকে সাক্সেনা মহাল্লা ক্লিনিকে রক্ত পরীক্ষায় বেনিয়মের তদন্ত করার জন্য সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে এরপরই অ্যান্টি-কোরাপশন ব্রাঞ্চকে তদন্তভার দেওয়া হয়।


শনিবার এসিবির তরফে প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্টে বলা হয়, একাধিক বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে ‘ভূত’দের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে, যারা আদতে কোনওদিন মহল্লা ক্লিনিকে যান-ই নি। ল্যাব ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম, যেখানে রোগীদের নাম ও মোবাইল নম্বর থাকত, তাতেও তথ্য বিকৃত করা হয়েছে। মনগড়া নাম ও ফোন নম্বর বসিয়ে নানা পরীক্ষার নামে সরকারের কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে প্রাইভেট ল্যাবগুলি।

প্রসঙ্গত, দিল্লির আপ সরকারের তরফে কম খরচে চিকিৎসার জন্য মহল্লা ক্লিনিক তৈরি করা হয়েছিল। চিকিৎসার পাশাপাশি নানা শারীরিক পরীক্ষাও হয় সেখানে। মাত্র ১০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই সমস্ত পরীক্ষার খরচ, যা বাইরের ল্য়াব থেকে করাতে ১-২ হাজার টাকা খরচ হয়।

এসিবির রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১২,৪৫৭টি রক্ত পরীক্ষার ক্ষেত্রে রোগীদের ফোন নম্বর নেই। ২৫,৭৩২টি পরীক্ষায় মোবাইল নম্বর শূন্য বসানো রয়েছে। ৯১৩টি পরীক্ষার ক্ষেত্রে ভুয়ো ফোন নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।

যদিও ল্যাবগুলির দাবি, তারা কেবল রক্তের নমুনা সংগ্রহ করত এবং পরীক্ষা করে রিপোর্ট জমা দিত। মহল্লা ক্লিনিকের টেকনিশিয়ানদের দায়িত্ব ছিল রোগীর নাম ও অন্যান্য় তথ্য নথিভুক্ত করা। গোটা ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours