জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার বলেন, "আমরা তো গত ৪৮ ঘণ্টায় কোনও রেফার করিনি। আমি বুঝতে পারছি না এই ৯ জন মারা যাওয়ায় জঙ্গিপুর হাসপাতালের নামটা কী করে উঠে এলো। আর আমাদের এসএনসিইউ একদিনও এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ হয়নি।"

 'জঙ্গিপুরের SNCU একদিনও বন্ধ হয়নি', ৯ শিশুর মৃত্যুতে এবার শুরু দায় ঠেলাঠেলি
এই পোস্টারই সাঁটানো ছিল গতকাল পর্যন্ত।

মুর্শিদাবাদ: মর্মান্তিক শিশুমৃত্যুর পর এবার শুরু দায় ঠেলাঠেলির পালা। গত ২৪ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদে ৯ সদ্যোজাতর মৃত্যু হয়েছে। ‘রেফার’ নিয়ে দায় ঝাড়তে উঠে পড়ে লেগেছে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতাল। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিলেন, দেড় মাসের বেশি সময় ধরে জঙ্গিপুর হাসপাতালে অকেজো স্পেশাল নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটস বা এসএনসিইউ (SNCU)। তার জেরে বেড়ে রেফার। এবার সেই দাবি ওড়ালেন জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার। তাঁর দাবি, তাঁদের হাসপাতাল থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও শিশু রেফার করা হয়নি। এসএনসিইউও ঠিকই আছে।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ বৃহস্পতিবার বলেন, “মোট ৯ জন বাচ্চা ২৪ ঘণ্টায় আমাদের এখানে মারা গিয়েছে। বেশির ভাগই অপুষ্টিতে ভোগা শিশু, ওজন কম। ৩০০ গ্রাম, ৫০০ গ্রাম ওজনের বাচ্চা ছিল। আরও একটা অসুবিধা হল আমাদের জঙ্গিপুরে যে হাসপাতাল সেখানে প্রায় দেড় মাস ধরে এসএনসিইউয়ের কাজ বন্ধ। ফলে সেখান থেকে সবই রেফার হচ্ছে এখানে। আমাদের ১২৯টা বেডে প্রায় ৩০০ রোগী।”

অন্যদিকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার অবিনাশ কুমার বলেন, “আমরা তো গত ৪৮ ঘণ্টায় কোনও রেফার করিনি। আমি বুঝতে পারছি না এই ৯ জন মারা যাওয়ায় জঙ্গিপুর হাসপাতালের নামটা কী করে উঠে এলো। আর আমাদের এসএনসিইউ একদিনও এক ঘণ্টার জন্যও বন্ধ হয়নি। এসএনসিইউয়ে কাজ চলছে ঠিকই। তার জন্য আমরা বিকল্প ব্যবস্থাও করেছি। ওখানে বাচ্চাদের ভর্তিও করা হচ্ছে। সেখানে ২৫টা বাচ্চাকে একসঙ্গে চিকিৎসা দিতে পারব।”

কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, দুই হাসপাতালের দায় ঠেলাঠেলির কথা সাধারণ মানুষ কেন শুনবেন? পর পর ৯ জন সদ্যোজাতর মৃত্যু নিশ্চয়ই খুব ছোটখাটো বিষয় নয়? সেখানে একে অপরকে দুষেই কি সময় কাটিয়ে দিলে চলবে? সূত্রের খবর, শিশুমৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার তদন্তে যাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের এক টিম। অন্যদিকে এদিন সকালে জঙ্গিপুর হাসপাতালের এসএনসিইউয়ে গিয়েও দেখা গেল, সেখানে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসা চলছে বাচ্চাদের।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours