কোন মাপকাঠির ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী নির্বাচন কমিশনারদের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করেন, প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট।


নির্বাচন কমিশনার হিসেবে চার জনের নাম তালিকাভুক্ত করে প্রধানমন্ত্রীকে সুপারিশ করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। কোন মাপকাঠির ভিত্তিতে মন্ত্রী এই তালিকা প্রস্তুত করেছেন, বৃহস্পতিবার সেটাই জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে একটি স্বাধীন ব্যবস্থা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। গত কয়েকদিন ধরেই সেই মামলার শুনানি চলছে শীর্ষ আদালতে। এই মামলায় বুধবার, সদ্য নিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার অরুণ গোয়েলের নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল দেখতে চেয়েছিল আদালত।



স্বেচ্ছাবসর দেওয়া হয়েছিল অরুণ গোয়েলকে। তার পরের দিনই তাঁকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। এরপরই, আদালত অরুণ গোয়েলের নিয়োগ সংক্রান্ত ফাইল দেখতে চেয়েছিল। আদালত জানিয়েছিল, কোনও ব্যক্তির নিয়োগ নিয়ে তাঁদের সমস্যা নেই। তাঁরা শুধুমত্র নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পদ্ধতিটি বুঝতে চাইছেন।

এদিন আদালতে সেই ফাইল পেশ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল আর বেঙ্কটরামণি। সেই ফাইল দেখার পর আদালত জানতে চেয়েছে, কেন একদিনের মধ্যে অরুণ গোয়েলকে নিয়োগ করা হয়েছে? আরও জানতে চাওয়া হয়েছে, যে ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হচ্ছে, তিনি পূর্ণ মেয়াদ পর্যন্ত কাজ করতে পারবে না, তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন নিয়োগ করা হল? উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশনারদের পদের মেয়াদ ৬ বছর এবং ৬৫ বছর পর্যন্ত বয়সে উর্ধ্বসীমা। এই আইনে অরুণ গোয়েলকেও মেয়াদ পূর্তির আগেই পদ ছাড়তে হবে।

বিচারপতি কেএম জোসেফ বলেন, “কোনও ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে আমাদের কোনও বিরোধিতা নেই। সত্যি কথা বলতে, অরুণ গোয়েল শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুসারে অসাধারণ। তবে, নিয়োগের কাঠামো নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। গত ১৮ তারিখ আমরা মামলাটি শুনেছিলাম। ওই একই দিনে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নাম সুপারিশ করেন। কেন এত তাড়াহুড়ো?”। বিচারপতি আরও বলেন, “জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীকে ৪ জনের নামের তালিকা দেন আইনমন্ত্রী। আমি বুঝতে চাই, এত জনের নামের মধ্য থেকে কীসের ভিত্তিতে তাঁদের নাম বেছে নেওয়া হয়েছে? এমন একজনের নাম পাঠানো হয়েছে, ডিসেম্বরেই যাঁর অবসর নেওয়ার কথা। তারপরও, যে চারজনের নাম সুপারিশ করা হয়েছে, তার মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ। এটা কি বাছাইয়ের মাপকাঠি?”

অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্তির কিছু ভিত্তি রয়েছে। যেমন – বয়ঃজ্যেষ্ঠতা, অবসরের সময়, নির্বাচন কমিশনে থাকার মেয়াদ ইত্যাদি। কিন্তু, তাঁর এই যুক্তি মানতে পারেনি আদালত। বিচারপতি জোসেফ জানান, একই ক্যাডারে এই মানদণ্ড পূরণ করেন, এমন আরও অফিসার আছেন। কীভাবে তাঁদের মধ্য থেকে অরুণ গোয়েলের নাম বেছে নেওয়া হল, তাই জানতে চেয়েছে আদালত।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours