পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দখল করা হচ্ছে সরকারি জমি। এমন অভিযোগ উঠছিল বেশ কিছুদিন ধরেই। এলাকার মানুষও সরব হয়েছেন। স্থানীয় লোকজনের দাবি, আদতে ওই দখলদারির পিছনে রয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। আর এই ঘটনায় প্রতিবাদ করলেই অস্ত্র হাতে হুমকি দিচ্ছে এলাকার দুষ্কৃতীরা। এ সব চলছে খাস কলকাতার বুকে।
পূর্ব কলকাতার কসবার নারকেলবাগান এলাকার ঘটনা। জানা গিয়েছে, কিছু অসাধু প্রোমোটারের হাত ধরে বেদখল করা হচ্ছিল এই জমি। অভিযোগ, এই ঘটনার পিছনে রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সাড়ে পাঁচ কাঠা জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন এলাকার মানুষজন। তাঁদের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দিনের আলোয় হোক বা রাতের অন্ধকারে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে বার বার ভয় দেখানো হচ্ছে তাঁদের। এলাকায় যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁদের মধ্যেই ছিলেন সমীর সর্দার নামে এক যুবক। তাঁকে আগেও বারবার হুমকি দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় রীতিমতো ধারাল অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রাণে মারার হুমকি দেয় ওই দুষ্কৃতীরা। যে কারণে রীতিমতো ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলেন ওই যুবক।
যুবকের মা টুম্পা সর্দার জানান, বাড়ি ফিরে তেমন একটা কথা বলেননি তাঁর ছেলে। শুধু বলেছিলেন, ‘ওই জমিতে অন্যায় কাজ হচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করেছি। তাই আমাকে মারতে চাইছে। আমি হয়তো খুন হয়ে যাব।’ এরপর তিনি খাওয়া দাওয়া করে নিজের ঘরে শুতে চলে যান। মাঝ রাতে উঠে টুম্পা সর্দার দেখেন, তাঁর ছেলে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় ছটফট করছে। হাতের শিরা কেটে রক্ত পড়ছে মেঝেতে। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর স্বামী ও পাড়ার যুবকদের ডাকেন। সমীরকে প্রথমে বাইপাস সংলগ্ন একটি হাসপাতালে, তারপর বাঘাযতীনের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, ওই যুবকের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক।
এই ঘটনার পর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি লিপিকা মান্নার সঙ্গে থাকা দুষ্কৃতীরাই এই জমি দখলের চেষ্টা করছিলেন। তাঁরা মূলত দিনো যাদব এবং তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সম্প্রতি সেই ব্যক্তি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুষ্কৃতী মূলক কার্যকলাপের অভিযোগ রয়েছে। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধির হাত তাঁর মাথার ওপর থাকায় তিনি এখন এলাকায় পুকুর ভরাট থেকে বেআইনি প্রোমোটিং সবকিছুই অবাধে করছেন। এলাকার বাসিন্দারা পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours