কাঁথি সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল শুভেন্দু অধিকারীকে। সোমবার কাঁথিতেই ইউনিয়নের ডিরেক্টরদের উপস্থিতিতে তাঁর অপসারণের সিদ্ধান্ত সিলমোহর দেওয়া হয়। ইউনিয়নের ১৫ জন ডিরেক্টরের মধ্যে ১৩ জনের সম্মতিতে তাঁকে ওই পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নের সম্পাদক হরিসাধন দাস অধিকারী। তিনি বলেন, ''গত দু'বছর ধরে শুভেন্দুবাবু ইউনিয়নের সঙ্গে সে ভাবে যোগাযোগ রাখছিলেন না। তাই সমবায় আন্দোলন ধাক্কা খাচ্ছিল। ইউনিয়নের শেষ ছয'টি বৈঠকেও তিনি যোগ দেননি। তাই সমবায়ের কাজকর্মকে সচল রাখতে একজন সর্বক্ষণের সভাপতি প্রয়োজন। তাই ইউনিয়নের ডিরেক্টররা সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে অপসারিত করেছেন।'' এই পদক্ষেপের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই বলেই দাবি করেছেন হরিসাধন। কিন্তু, শুভেন্দু অনুগামীদের কথায়, বিরোধী দলনেতাকে সরাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কলকাঠি নেড়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে কাঁথি সমবায় ইউনিয়নের সভাপতি পদে ছিলেন শুভেন্দু।

প্রসঙ্গত, তৃণমূলে থাকার সময়ও তাঁকে ওই পদ থেকে সরাতে উদ্যোগী হয়েছিল তৃণমূলের অধিকারী-বিরোধী গোষ্ঠী। কিন্তু, সেই সময় তাঁকে সরাতে সফল হননি শুভেন্দু-বিরোধী ওই তৃণমূল নেতারা। কিন্তু, তাঁর বিজেপি-তে যোগদানের পরেই সমবায় ব্যাঙ্ক ও ইউনিয়নের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণের দাবিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন তৃণমূলের সেই নেতারাই। এগরা ও কাঁথি মহকুমায় যাঁরা সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত তাঁরাই এই ইউনিয়নের সদস্য। আর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সমবায় ব্যবস্থাই অনেকাংশে রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাই জেলার রাজনীতিতে শুভেন্দুর ক্ষমতা খর্ব করতে সমবায় ব্যবস্থার সঙ্গে তাঁর যাবতীয় যোগসূত্র কেটে দিতে চাইছে শাসকদল। সেই লক্ষ্যেই তাঁকে এই পদ থেকে সরানো হয়েছে। তাঁর অপসারণ নিয়ে নন্দীগ্রাম বিধায়ক বলছেন, ''আমি স্বেচ্ছায় মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলাম। তাই কোনও ছোটখাটো পদ ছাড়তে আমার কোনও অসুবিধা নেই। মানুষের সঙ্গে থাকা ও মানুষের জন্য কাজ করায় আমার আসল লক্ষ্য।"

কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকে তাঁকে সরাতে উদ্যোগ শুরু করেছিল রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকছেন শুভেন্দু। তবে কাঁথি কার্ড সমবায় ব্যাঙ্ক ও বিদ্যাসাগর সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদ থেকেও তাঁকে সরানোর বিষয়ে আইনি শলাপরামর্শ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এক তৃণমূল নেতার কথায়, ''রাজ্য সমবায় ব্যবস্থার যে সমস্ত পদে বিরোধী দলনেতা রয়েছেন, তার সবটাই তাঁর তৃণমূল নেতৃত্বের থেকে পাওয়া। তাই যেদিন তিনি বিজেপি-তে নাম লিখিয়েছিলেন সেদিনই তাঁর ওই সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত ছিল। তিনি ইস্তফা না দেওয়ায় আমাদের জোর করে তাঁকে সরাতে হচ্ছে।''


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours