যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক স্তরের ভর্তি এ বার কী ভাবে নেওয়া হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। প্রবেশিকা পরীক্ষা অথবা ইন্টারভিউ— ভর্তির ক্ষেত্রে এর যে কোনও একটি পদ্ধতি এ বার অনুসরণ করার পক্ষে রয়েছে বেশ কিছু বিভাগ।

অতিমারি আবহে এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। সিবিএসি-র দ্বাদশ এবং আইএসসি পরীক্ষাও হচ্ছে না। এ বার উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে মাধ্যমিকের ফল এবং একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষার নম্বরকে গুরুত্ব দিয়ে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই পড়ুয়ারা উচ্চ মাধ্যমিকের ফল হাতে পাবেন। তাই স্নাতক স্তরে পড়ুয়াদের ভর্তি করতে তাদের মান যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। স্নাতক স্তরে যে বিষয়ে কোনও পড়ুয়া পড়তে ইচ্ছুক, সেই বিষয়ে তাঁর ব্যুত্‍পত্তি কতটা, তা দেখে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকে।

এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা বিভাগের যে সব বিষয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়, গত বছর করোনার কারণে তা নেওয়া হয়নি। সে বার কলা বিভাগের স্নাতক স্তরে ভর্তি নেওয়া হয়েছিল মূলত উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে। তবে বাংলার ক্ষেত্রে মাধ্যমিকের ভাষা গ্রুপের ফলও দেখা হয়েছিল। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে উচ্চ মাধ্যমিকের পাশাপাশি মাধ্যমিকের ফলকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। তবে এ বার স্নাতক স্তরে ভর্তিতে প্রবেশিকা পরীক্ষা অথবা ইন্টারভিউ নেওয়ার পক্ষেই কথা বলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ইমনকল্যাণ লাহিড়ী শনিবার জানালেন, তাঁদের বিভাগে স্নাতক স্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রাথমিক পড়ুয়া তালিকা তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা। এর পরে তালিকাভুক্ত পড়ুয়াদের ইন্টারভিউ নিয়ে তবেই চূড়ান্ত বাছাই করতে চাইছেন। সূত্রের খবর, বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ বিভাগও চাইছে, কোনও না কোনও ভাবে পড়ুয়াদের মান যাচাই করে নিতে।

কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভায়ন আচার্য চৌধুরী এ দিন জানালেন, তাঁরা প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে। এ নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যেই কর্তৃপক্ষকে জানাবেন তাঁরা। বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংসদের চেয়ারপার্সন জ্যোতির্ময় বিশ্বাস জানালেন, আপাতত সিমেস্টার পরীক্ষা নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁদের মতামত জানাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ''আমরা মনে করি, ভর্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।''
বিষয়টি নিয়ে এ দিন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ''বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে আমরা ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চালাচ্ছি। আলোচনা দু'ভাবে হচ্ছে। যদি পরীক্ষা নেওয়া হয়, তা হলে তা কী ভাবে নেওয়া হবে। আর যদি না-নেওয়া হয়, তা হলে পড়ুয়াদের বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মাপকাঠি কী হবে? এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পরামর্শের জন্যও আমরা অপেক্ষা করছি।''

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours