দলের বিধায়কদের চাঁদা দ্বিগুণ করে দিল তৃণমূল। তাদের পরিষদীয় দল সূত্রে এমনটাই খবর। ২০০১ সাল থেকে তৃণমূল বিধায়কদের বেতন থেকে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে তহবিলে নিত। ২০০৬, ২০১১ এবং ২০১৬ সালের ভোটের পরেও সেই পরিমাণে কোনও বদল আসেনি। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের পর সেই পরিমাণ বদলানো হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। তৃণমূল পরিষদীয় দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবার থেকে দলীয় তহবিলে বিধায়কদের চাঁদা দিতে হবে দ্বিগুণ। অর্থাত্‍, মাসে ২,০০০ টাকা।

সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর বিষয়টি প্রত্যেক বিধায়ককে পৃথক ভাবে জানিয়ে দেওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এখনও বিধায়কদের থেকে দ্বিগুণ চাঁদা কাটার কাজ শুরু করা যায়নি বলেই জানিয়েছেন পরিষদীয় দলের এক সদস্য।গত ২ মে ভোটের ফল ঘোষণার পর পর ৬ এবং ৭ মে বিধায়কদের শপথগ্রহণের কাজ হয়েছে বিধানসভায়। করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে বেশিরভাগ বিধায়কই বেতনের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টও পর্যন্ত খুলতে পারেননি। দ্রুত তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে নিজ নিজ এলাকায়। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের সময় এলাকার মানুষের পাশে থাকতে। পাশাপাশিই, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সময়েও সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়কদের ত্রাণ এবং পুনর্বাসনের কাজে মনোনিবেশ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। ফলে অনেকেই এখনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেননি। তবে নবগঠিত বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসার আগে তাঁরা অ্যাকাউন্ট খোলার চেষ্টা করবেন।

রাজ্য বিধানসভায় তৃণমূলের ২১২ জন বিধায়কের (ভবানীপুর থেকে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় পদত্যাগ করার পর এটিই আপাতত তৃণমূলের বিধায়কসংখ্যা) মধ্যে ১৬৫ জনের বেতনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। পুরনো পাঁচজন বিধায়কের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া তৃণমূলের প্রতীকে জিতে আসা নতুন বিধায়কের সংখ্যা ৪৩ জন। নতুন বিধায়কদের বেতনের অ্যাকাউন্ট এখনও খোলা যায়নি। তাই নতুন সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঠিক হয়েছে, করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই বিধায়কদের দ্রুত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হবে। তারপরই গত মে মাস থেকে হিসেবে কষে তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে মাসে ২,০০০ টাকা করে দলীয় তহবিলের জন্য কেটে নেওয়া হবে। অর্থাত্‍, বেতন থেকে সরাসরি ওই অর্থ প্রতি মাসে দলের তহবিলে জমা পড়বে।

একজন বিধায়ক শপথ নেওয়ার দিন থেকে ভাতা, ফোনের বিল ও বাড়িভাড়া বাবদ মাসে ২১,৮৭০ টাকা পান। এ ছাড়াও দৈনিক ভাতা ও বিধানসভার বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য মাসিক ৬০,০০০ টাকা পান। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে প্রায় ৮২,০০০ টাকা পান পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার একেক জন সদস্য। সেই পাওনা অর্থ থেকেই তৃণমূলের দলীয় তহবিলে নেওয়া হবে ২,০০০ টাকা। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসবে বলে জানা গিয়েছে। সেই সময়েই দলীয় বিধায়কদের নতুন অ্যাকাউন্ট খোলা-সহ বেতন থেকে দলীয় চাঁদা কেটে নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। বিধানসভায় শাসকদলের উপ মুখ্য সচেতক তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় বৃহস্পতিবার বলেন, ''দলের জন্যই সকলের বিধায়ক হওয়া। তাই দল যখন চাঁদা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন পরিষদীয় দলের সদস্যরা দলের সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই মেনে নেবেন।''
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours