হাসপাতাল কক্ষের জানালা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করলেন দিল্লির এক করোনা আক্রান্ত রোগী। বছর বাহান্নর ওই মহিলা দিল্লির রাজীব গান্ধী সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ছ'তলায় যে রুমে ওই মহিলাকে রাখা হয়েছিল, বুধবার তারই একটি খোলা জানালা দিয়ে সবার অলক্ষ্যে ঝাঁপ দেন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। এক চিকিত্‍‌সকের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, ওই মহিলা মানসিক অবসাদেও ভুগছিলেন। যার জেরে এই পরিণতি। মঙ্গলবারই তিনি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
হাসপাতাল থেকে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম পদ্মজা। বাড়ি দিল্লির দিলশাদ কলোনিতে। RGSSH-এর বরিষ্ঠ এক ডাক্তার জানান, মহিলার স্বামী ও ছেলেও করোনা পজিটিভ। তাঁরাও একই হাসপাতালে চিকিত্‍‌সাধীন রয়েছেন। মহিলার সঙ্গে তাঁর ছেলেকেও ছ'তলায় রাখা হয়। তাঁর স্বামী ছিলেন সাত তলায়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জিটিবি হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। অবসাদই আত্মহত্যার কারণ কি না, পুলিশ তা তদন্ত করে দেখছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দৈনিক সংক্রমণে মহারাষ্ট্র ও কেরালাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারতের রাজধানী শহর। সংক্রমণে রাশ টানতে না পাড়ায় এদিন দিল্লি হাইকোর্টের ভর্ত্‍‌সনার মুখে পড়তে হয় অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকারকে। সংক্রমণে লাগাম টানতে বিগতে দু-সপ্তাহ ধরে কেজরি সরকার কী কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতে চায় হাইকোর্ট।স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৮,৫৯৩ জন। সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে আরও ৮৫ জনের। সবমিলিয়ে মোট আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ৪ লক্ষ ৫৯ হাজার ৯৭৫। এ পর্যন্ত মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৭,২২৮।
দিল্লিতে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু ১৬ জুন। ওই দিন রাজধানীতে ৯৩ জনের প্রাণ কেড়েছিল করোনা। তার পর, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যু (৮৫) হল এদিনই। গত ২৪ ঘণ্টায় অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ৪১,৩৮৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৪২,৬২৯। মঙ্গলবার সারাদিনে ৬৪,১২১ জনের কোভিড টেস্ট হয়েছে। এর মধ্যে ১৯,৩০৪টি আরটি-পিসিআর টেস্ট। এর আগে গত মঙ্গলবারই দৈনিক সংক্রমণে রেকর্ড গড়েছিল রাজধানী। ৭,৮৩০ জনের কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ে। ওই দিন মৃত্যু হয় ৮৩ জনের। বর্তমানে দিল্লির পজিটিভিটি রেট ১৩.৪ শতাংশ।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দর জৈন আগেই ঘোষণা করেছিলেন দিল্লিত করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। যে কারণে সংক্রমণ-মৃত্যুর রোজ নয়া-নয়া রেকর্ড হচ্ছে। এদিন তিনি আবারও তা স্মরণ করিয়ে বলেন, সংক্রমণের তৃতীয় শিখর ছুঁতে আগের গুলির তুলনায় দীর্ঘ সময় লাগছে। তবে, তিনি আশাবাদী আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দৈনিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours