প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকার পরে দিল্লি, মুম্বই-সহ ছ’টি শহর থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান চালু করার ক্ষেত্রে সম্মতি দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন। তবে ওই ছ’টি শহর থেকে সপ্তাহে সর্বাধিক তিনটি উড়ান চলবে না কি তিন দিন উড়ান চলবে, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি উড়ান সংস্থাগুলির কাছে। এ বিষয়ে তারা রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে। যদিও কলকাতা থেকে দিল্লি বা অন্য শহরে যাওয়ার ক্ষেত্রে উড়ান সংখ্যায় কোনও বাধ্যবাধকতা থাকছে না।
যে হেতু এই নিষেধাজ্ঞা কলকাতায় আসা উড়ান নিয়ে ছিল, ১৫ অগস্টের পরে কলকাতা থেকে দিল্লি ও মুম্বই যাওয়ার হাতে গোনা কিছু উড়ান চালু হয়েছিল। সরাসরি উড়ান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা ছিল দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, আমদাবাদ, পুণে এবং নাগপুর— এই ছ’টি শহর থেকে। পুণে, নাগপুর এবং আমদাবাদের সঙ্গে সেই অর্থে কলকাতার সরাসরি খুব বেশি উড়ান ছিল না। কিন্তু প্রতিদিন দিল্লি, মুম্বই এবং চেন্নাইয়ে বেশ কিছু উড়ান যাতায়াত করত। 
জুলাইয়ের গোড়ায় রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে ওই ছ’টি শহর থেকে কলকাতার সরাসরি উড়ান বন্ধ করতে বলা হয়। রাজ্য জানিয়েছিল, প্রবল করোনা সংক্রমিত এই শহরগুলি থেকে যাত্রীরা কলকাতায় এলে এখানেও সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়াবে।
রাজ্যের অনুরোধ মেনে কেন্দ্র গত ৬ জুলাই সেই নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তিন দফায় তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। বর্তমানে ৩১ অগস্ট পর্যন্ত ওই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ আছে। ৬ জুলাই থেকে ১৫ অগস্ট পর্যন্ত ওই ছ’টি শহরে যাতায়াতের উড়ান বন্ধ রাখে সংস্থাগুলি। তাদের যুক্তি ছিল, এ ভাবে একপিঠের উড়ান চালিয়ে সূচি তৈরি করা মুশকিল। তবে কলকাতা থেকে দিল্লি ও মুম্বইয়ে সরাসরি উড়ানের চাহিদা বাড়তে থাকায় দু’-একটি সংস্থা ১৫ অগস্টের পরে একপিঠের উড়ান চালু করে।
প্রধানত দিল্লি, মুম্বই থেকে সরাসরি উড়ান আসা নিয়ে এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বহু মানুষ অসুবিধায় পড়ে যান। যাঁদের দিল্লি ও মুম্বই থেকে কলকাতায় যাতায়াত করার ছিল, তাঁরা অন্য শহর ঘুরে যাতায়াত শুরু করেন। এর ফলে টাকার পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগছিল। গুয়াহাটি, পটনা, ভুবনেশ্বর, বারাণসী-সহ বিভিন্ন শহর ঘুরে তাঁরা যাতায়াত করছিলেন।
বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের জন্য কেন্দ্রের যে ‘বন্দে ভারত’ উড়ান চলছে, তা-ও কলকাতায় নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফলে কলকাতার বহু বাসিন্দা বিদেশ থেকে দিল্লি এসে সেখানে কোয়রান্টিনে থাকার পরে শহরে আসার সরাসরি উড়ান পাচ্ছিলেন না। এতে তাঁদের সমস্যা বাড়ছিল। কারণ বিদেশ থেকে আসা ওই যাত্রীদের সঙ্গে মালপত্রের পরিমাণ অনেক বেশি থাকছিল। অত জিনিস নিয়ে তাঁদের পক্ষে অন্য শহর ঘুরে কলকাতায় আসা সম্ভব হচ্ছিল না।
মাঝে কলকাতার ট্র্যাভেল এজেন্টরা এবং উড়ান সংস্থার প্রতিনিধিরা রাজ্য সরকারকে জানান, দিল্লি ও মুম্বইয়ের মধ্যে সরাসরি উড়ান চালু না-হওয়ায় বহু যাত্রী যেমন অসুবিধায় পড়ছেন, তেমন তাঁদের ব্যবসাও মার খাচ্ছে। প্রতি বারই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার আশায় মানুষ টিকিট কাটছিলেন এবং পরে তা বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছিলেন।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours