ডাক বিভাগের পেমেন্টস ব্যাঙ্ক (আইপিপিবি) ও আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক (আরআরবি) মিশছে বলে জোর জল্পনা বাজারে। কেন্দ্রীয় সরকারি সূত্রের খবর, এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বটে। তবে পুরোটাই আলোচনার স্তরে। যদিও গ্রামীণ ব্যাঙ্ক ও ডাককর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলির দাবি, কার্যত খুঁড়িয়ে চলা আইপিপিবি-কে লাভজনক আরআরবি-র ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্র। যে ভাবে এর আগে ইয়েস ব্যাঙ্ক-কে উদ্ধারে এলআইসি বা আইডিবিআইয়ের জন্য স্টেট ব্যাঙ্ককে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এতে গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলির বোঝা বাড়বে।

৬১৮টি জেলায় ২৩ হাজার শাখা মারফত কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নে ৯০% ঋণ দেয় দেশের ৪৫টি আরআরবি। এ রাজ্যে তিনটি। এগুলিতে কেন্দ্রের অংশীদারি ৫০%। সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও ‘স্পনসর্ড’ ব্যাঙ্কের যথাক্রমে ১৫% ও ৩৫%। আর দেশে আইপিপিবির শাখা ৬৫০। আরআরবিগুলি টাকা জমা ও ঋণ, দুই ব্যবসাতেই যুক্ত। আইপিপিবি শুধু গ্রাহকের সেভিংস অ্যাকাউন্টে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জমা রাখতে পারে।

সরকারি সূত্রে খবর, সত্যিই তারা মিশলে প্রায় স্টেট ব্যাঙ্কের মাপের বিরাট নেটওয়ার্ক তৈরি হবে। যেটা লোভনীয়। তবে আরআরবি-র অংশীদারির কাঠামোর কারণে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে এগোতে হবে কেন্দ্রকে। যদিও কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগ সূত্রের দাবি, এই সংযুক্তির খবর জানা নেই। 

সংযুক্তির এই ভাবনাটির বাস্তবতা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন অল ইন্ডিয়া আরআরবি অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৃজন পাল ও ব্যাঙ্কের অফিসারদের সংগঠন আইবকের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাস। তাঁদের প্রশ্ন, ‘দুর্বল’ আইপিপিবির দায়িত্ব কেন নেবে আরআরবি? সংশ্লিষ্ট মহলের তোপ, কেন্দ্র যতটা ঢাকঢোল পিটিয়ে আইপিপিবি শুরু করেছিল, তার ব্যবসা ততটা আশাব্যঞ্জক হয়নি। ফলে সম্প্রসারণও থমকে গিয়েছে।

ন্যাশনাল ফেডারেশন অব পোস্টাল এমপ্লয়িজ়ের রাজ্য সম্পাদক জনার্দন মজুমদার জানান, তাঁরা এ নিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। তবে তাঁর অভিযোগ, যে পদ্ধতিতে আইপিপিবি তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে আপত্তি ছিল। এ ভাবে ডাক বিভাগের কাছে জমা বিপুল আমানত ভবিষ্যতে বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পথ খোলা হচ্ছে বলেও তখন তোপ দেগেছিলেন তাঁরা। ডাক বিভাগের যদিও দাবি, আইপিপিবি-র পুরো অংশীদারি তাদের হাতেই। সেই আশ্বাস ভবিষ্যতে কতটা সুরক্ষিত থাকে, তা অবশ্য সময় বলবে।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours