অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় নাম রয়েছে মোট ৩ হাজার ৫৯১ জনের। যাঁদের মধ্যে গ্রুপ সি-তে ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছিলেন ৭৮৩ জন। এছাড়াও, সুপারিশপত্র ছাড়া চাকরি পেয়েছেন ৫৭ জন অযোগ্য। গ্রুপ ডি-র পাতায় দাগিদের সংখ্যা ১ হাজার ৭৪১। ওএমআর জালিয়াতি থেকে র্যাঙ্ক জাম্প সবেরই অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
সাড়ে ৩ হাজার! প্রকাশ্যে শিক্ষাকর্মীদের 'দাগি তালিকা', নাম রয়েছে তৃণমূল ঘনিষ্ঠদেরও
এসএসসি ভবন
সুমন মহাপাত্র
নতুনদের আহ্বান, পুরনো দাগিদের ‘উচ্ছেদ’। যে দিন থেকে শুরু হল এসএসসি-র গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি নিয়োগের আবেদন প্রক্রিয়া। সেই দিনই অযোগ্য বা দাগি শিক্ষা কর্মীদের তালিকা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিল স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)। বিকালের দিকে সেই তালিকা প্রকাশ করার কথা রয়েছে কমিশনের। কিন্তু তাঁর সেই অযোগ্যদের তালিকায় চলে এসেছে টিভি৯ বাংলার হাতে। কত জনের নাম তুলে ধরল কমিশন? তৃণমূল ঘনিষ্ঠ রয়েছে কি?
সম্প্রতি অযোগ্য় শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল এসএসসি। এবার পালা অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের। সূত্রের খবর, এসএসসি-র তৈরি অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় নাম রয়েছে মোট ৩ হাজার ৫৯১ জনের। যাঁদের মধ্যে গ্রুপ সি-তে ওএমআর জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছিলেন ৭৮৩ জন। এছাড়াও, সুপারিশপত্র ছাড়া চাকরি পেয়েছেন ৫৭ জন অযোগ্য। গ্রুপ ডি-র পাতায় দাগিদের সংখ্যা ১ হাজার ৭৪১। ওএমআর জালিয়াতি থেকে র্যাঙ্ক জাম্প সবেরই অভিযোগ রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
সদ্য প্রকাশিত ২০১৬ সালের বাতিল প্যানেলের অযোগ্য শিক্ষকদের তালিকায় ভরে ভরে পাওয়া গিয়েছিল তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নাম। শুধুই ঘনিষ্ঠ নয়, কেউ কেউ ছিলেন তৃণমূল নেতাও। সেই তালিকায় নাম উঠেছিল মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর। নাম ছিল হুগলির এক দাপুটে তৃণমূল নেতার। নাম ছিল রাজপুর সোনারপুর পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কুহেলি ঘোষেরও।
শিক্ষকের তালিকার পর এবার প্রকাশ্যে দাগি শিক্ষাকর্মীদের তালিকা। তাতে তৃণমূল ঘনিষ্ঠরা যে নেই, এমনটা নয়। সূত্রের খবর, অযোগ্য শিক্ষাকর্মীদের তালিকায় রয়েছেন এক শাসকদলের বিধায়কের খুড়তুতো ভাই। রয়েছেন এক তৃণমূল নেতার ভাইঝি। রয়েছে আরেক নেতার নিজের দাদার নাম। এমনকি, রয়েছেন এক তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতার ঘনিষ্ঠও। তৃণমূলের সংখ্যা তালিকায় আপাতত এতটাই, তবে সময়ের সঙ্গে যে তা বাড়বে না, এই নিশ্চয়তাও দেওয়া যাচ্ছে না।
তা হলে কি বাকিরা যোগ্য? একাংশের চাকরি হারানো প্রার্থীরা বারংবার এই ইস্যুটাকেই তুলেছিলেন। তাঁরা দাবি জানিয়েছিল, অযোগ্য তালিকা প্রকাশের। কারণ, সেই তালিকায় নাম না থাকারা ‘যোগ্য়’ বলে গণ্য হবেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তা বলছে না। ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিলের কারণ হিসাবে শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, যেহেতু কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য সম্পূর্ণ ভাবে ঠাওর করা যাচ্ছে না, তাই প্রয়োজন নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার। বিচারপতিরা আরও বলেছিলেন, বেশির ভাগ ওএমআর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যেগুলো উদ্ধার করা গিয়েছিল, তা দিয়েই কিছু সংখ্যক অযোগ্যকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। কিন্তু এটা চূড়ান্ত সংখ্যা নয়।
শুরু আবেদন প্রক্রিয়া
গত ৩রা এপ্রিল সুুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরি হারান ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। পুরনো প্যানেল বাতিল করে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। বেঁধে দিয়েছিল সময়। সেই সব নিয়ম মেনেই আপাতত মিটেছে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া। এবার পালা শিক্ষাকর্মী নিয়োগের। সেই মর্মে গত ১০ই অক্টোবর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসএসসি। যার আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে সোমবার অর্থাৎ আজ থেকে। চলবে টানা ৩রা ডিসেম্বর পর্যন্ত।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours