জলপাইগুড়ির পোড়াঝাড়ে ওই নদীর চর নাকি সোনার দরে বিক্রি হয়। চরেই টাকার বিনিময়ে কলোনী পর্যন্ত বসিয়েছিলেন শাসক নেতা থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরা। দুর্যোগ আসায় মহানন্দায় কার্যত বানভাসি একটা আস্ত কলোনি। টাকা ও ঘর সব গিলেছে নদী। ক্যামেরা দেখে কেঁদে ফেললেন পোড়াঝাড়ের বাসিন্দারা।
এখানে নদীর চর বিক্রি হয় সোনার দরে, বসে গিয়েছে আস্ত কলোনি, সেই চরেই ছাদ হারাল ওরা
চরে বসে বাসিন্দারা
নদীর চর। সেটাও টাকা দিয়ে কেনে ওরা। লাখ লাখ টাকায় নদীর চরের জমি বিক্রি হয়। দিনে দিনে বাড়ছে দাম। দরিদ্র মানুষ, যাদের মাথাগোঁজার জায়গাটুকু নেই, তারা দাম দিয়ে জমি কিনে বাড়ি বানাচ্ছেন, আর আজ যখন প্রবল বৃষ্টিতে-ধসে সব ভেসে গিয়েছে, তখন সেই মানুষগুলোই ক্ষতিগ্রস্ত হল। কারা এভাবে বিক্রি করে চর? সাংবাদিকদের সামনে শাসক দলের নেতাদের নাম বলে দিচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা।
জলপাইগুড়ির পোড়াঝাড়ে ওই নদীর চর নাকি সোনার দরে বিক্রি হয়। চরেই টাকার বিনিময়ে কলোনী পর্যন্ত বসিয়েছিলেন শাসক নেতা থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরা। দুর্যোগ আসায় মহানন্দায় কার্যত বানভাসি একটা আস্ত কলোনি। টাকা ও ঘর সব গিলেছে নদী। ক্যামেরা দেখে কেঁদে ফেললেন পোড়াঝাড়ের বাসিন্দারা। কাঁদতে কাঁদতে দুর্দশার ছবি দেখালেন তাঁরা। এক মহিলা জানান, দেড় লক্ষ টাকায় ওই জমি কিনেছিলেন তিনি। আর বর্তমানে সেই জমি বিক্রি হচ্ছে চার লক্ষ টাকা দরে।
নদী ও বাঁধের মাঝে বিস্তীর্ণ এলাকায় কয়েক’শ বাড়ি গড়ে উঠেছিল। সব ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে মহানন্দার জল। খাবার নেই। রিলিফ ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়ে রামকৃষ্ণ মিশন সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দেওয়া খাবার খেয়েই এখন দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সদস্য টাকা নিয়ে নদীর চরে বসিয়েছিল। এখন টাকা ও ঘর দুই-ই গেল!
সেদিন দুর্যোগে বাঁধ ভেঙেছিল এলাকায়। নদী ও বাঁধের মাঝের বাসিন্দারা বলছেন এটা আশীর্বাদ। নাহলে বাংলাদেশেই ভেসে যেতেন তাঁরাও। এলাকায় বসবাসকারী স্কুল পড়ুয়াদের বই থেকে যাবতীয় নথি সব ভেসে গিয়েছে এলাকায়। ভেসে গিয়েছে গবাদি পশুও। এলাকায় গিয়ে দেখা যায় বহু বাড়িতে রোদ উঠতেই কেউ ধান শুকোচ্ছেন, কেউ আবার বই শুকোচ্ছেন। পলি পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সে সব বই।
এই পোড়াঝাড় অঞ্চলটি পড়ে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা এলাকায়। এই এলাকা নিয়ে একসয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই এলাকার ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছিল তাঁকে। গজলডোবাতেও দেখা যায় একই ছবি। দু-একজন গ্রেফতার হন, আবারও জামিন পেয়ে যান। দু’একটা মামলাও হয়। কিন্তু ওই পর্যন্তই। যারা টাকা দিয়ে জমি কিনে বসবাস করে, তারাই হয় দুর্ভোগের শিকার।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours