মেলেনি আবাস যোজনার ঘর, পান না বার্ধক্য ভাতা-রেশন! ‘পাড়ায় সমাধানে’ গিয়ে কেঁদে ফেললেন বৃদ্ধ


 রারিয়াল গ্রামের বাসিন্দা বছর চৌষট্টির কলিমুদ্দিন। বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারেন না। বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী এবং বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে। প্রায় ১৫ বছর আগে ভেঙে গিয়েছে ঘর। সেই ভগ্ন প্রায় জরাজীর্ণ ঘরে দিন গুজরান।




মেলেনি আবাস যোজনার ঘর। লক্ষ্মীর ভান্ডার থেকে শুরু করে বার্ধক্য ভাতা, এমনকি রেশন পর্যন্ত মেলে না। ‘পাড়ায় সমাধান’ ক্যাম্পে গিয়ে সরকারি সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ব্লক সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের সামনে অঝোরে কেঁদে ফেললেন বৃদ্ধ দম্পতি। 

কিন্তু তাদের সেই আবেদন কর্ণপাতই করলেন না বিডিও। এদিন আবার ঘটা করে সেই মডেল ক্যাম্প পরিদর্শনে এসে ছিলেন জেলাশাসক এবং রাজ্যের পরিবহন দফতরের সচিব। প্রশাসন এবং জন-প্রতিনিধিদের ভূমিকায় বড় প্রশ্ন চিহ্ন? মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এই ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।

রারিয়াল গ্রামের বাসিন্দা বছর চৌষট্টির কলিমুদ্দিন। বয়সের ভারে আর কাজ করতে পারেন না। বাড়িতে রয়েছে স্ত্রী এবং বিশেষভাবে সক্ষম ছেলে। প্রায় ১৫ বছর আগে ভেঙে গিয়েছে ঘর। সেই ভগ্ন প্রায় জরাজীর্ণ ঘরে দিন গুজরান। কোন রকম সরকারি সাহায্য পান না তাঁরা। তাঁর স্ত্রী সামেনুর বিবি মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডারের সুবিধা পান না। মেলেনি আবাস যোজনার ঘর। বার্ধক্য ভাতাও পাননি কলিমুদ্দিন। শাক পাতা খেয়ে অভুক্ত অবস্থায় কোন রকমে হচ্ছে দিন গুজরান।



এদিন এলাকার রারিয়াল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাজ্য সরকারের পাড়ায় সমাধান ক্যাম্প চলছিল। যে শিবির পরিদর্শনে এসে ছিলেন জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া, রাজ্যের পরিবহন দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহন। অসহায় বৃদ্ধ দম্পতি ভেবেছিলেন এই সমাধান শিবিরে গেলে হয় তো তাদের সমস্যার সমাধান হবে। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক সৌমেন মন্ডলের কাছে গিয়ে নিজেদের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তাঁরা। কিন্তু অসহায় এই দম্পতির চোখের জলেও দৃষ্টি আকর্ষণ হয়নি প্রশাসনের।

বিডিও কার্যত তাঁদের আবেদন কর্ণপাত করেননি। ওই দম্পতির প্রতিবেশীরাও জানাচ্ছেন, তাঁদের অসহায়তার কথা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আর কত গরিব হলে মিলবে সরকারি সাহায্য। হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লক বিডিও সৌমেন মন্ডল ক্যামেরার সামনে কোন মন্তব্য করতে চাননি। অসহায় বৃদ্ধ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আমি এইভাবে মোটামুটি ১০-১৫ বছর ধরে রয়েছি। বাড়িও পড়ে গিয়েছে বৃষ্টিতে। ভাঙা বাড়িতে রয়েছি। কেউ কোনও কাজ করে দিচ্ছে না। বিডিও বলছেন, আমি কিছু করে দিতে পারব না। আবেদন করেছেন, যদি টাকা আসে পাবেন।”

সমগ্র ঘটনা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তীব্র আক্রমণ বিজেপির। যদিও এই বিষয় নিয়ে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা শাসক শিবিরের। জেলা বিজেপির সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেন, “ছাব্বিশের নির্বাচনকে সামনে রেখে লোককে আবার ভাঁওতা দিতে চলেছে তৃণমূল। আমার পাড়া, সমস্যার সমাধান! সবটাই ভাঁওতা। যদি সমাধানই হতো, তাহলে তো এদের পরিবারের সমস্যার সমাধান হত। রাজ্য সরকারের কোনও প্রকল্পেরই সুবিধা পায়নি।”

যদিও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির স্বামী তথা পঞ্চায়েত সদস্য আবুল হোসেন আসরাফি বলেন, “আগে কী হয়েছে, আমরা জানি না। তবে আমাদের কাছে অভিযোগ এলে, অবশ্যই আমরা খতিয়ে দেখব। যা যা সরকারি সুবিধা রয়েছে, তাঁকে পাইয়ে দেওয়ার আমরা ব্যবস্থা করে দেব।”

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours