পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটের সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর আটত্রিশের দেবকুমার। স্ত্রীকে বলে যান, তিনি তারকেশ্বর যাচ্ছেন। হরিপাল থানার অন্তর্গত নালিকূল স্টেশন সংলগ্ন গ্যারেজে বাইকটি রেখে যান। কয়েকঘণ্টা পরও বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী অর্পিতা দাস হরিপাল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।
১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ না দিলেই স্বামীকে গুম', মেসেজ পেয়েই থানায় মহিলা, তারপর...
প্রতীকী ছবি
তারকেশ্বর যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ‘অপহৃত’ এক প্রাথমিক শিক্ষক। হগলির নালিকূলের ওই প্রাথমিক শিক্ষকের স্ত্রীর ফোনে ১৫ লক্ষ টাকা চেয়ে মেসেজ আসে। শেষপর্যন্ত তদন্তে নেমে দেবকুমার দাস নামে ওই শিক্ষককে মধ্যপ্রদেশ থেকে উদ্ধার করে হুগলি গ্রামীণ পুলিশ। একটি ট্রেন থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। কিন্তু, তাঁর সঙ্গে আর কাউকে নজরে পড়েনি পুলিশের। ফলে তাঁর স্ত্রীর ফোনে মুক্তিপণের মেসেজ কে বা কারা পাঠাল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ওই ব্যক্তিকে অপহরণ করা হয়েছিল, নাকি তিনি নিজেই কোথাও যাচ্ছিলেন, তা তদন্ত করে দেখছে হরিপাল থানার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৪ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটের সময় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন বছর আটত্রিশের দেবকুমার। স্ত্রীকে বলে যান, তিনি তারকেশ্বর যাচ্ছেন। হরিপাল থানার অন্তর্গত নালিকূল স্টেশন সংলগ্ন গ্যারেজে বাইকটি রেখে যান। কয়েকঘণ্টা পরও বাড়ি না ফেরায় তাঁর স্ত্রী অর্পিতা দাস হরিপাল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। এরপর অর্পিতার ফোনে একটি মেসেজ আসে। সেখানে জানানো হয়, তাঁর স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। ১৫ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে। পুলিশকে বললে দেবকুমারকে গুম করে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। হুমকির বিষয়টি থানায় জানান অর্পিতা।
তদন্তে নেমে পুলিশ দেবকুমারের ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে। প্রথমে দেখা যায়, তাঁর ফোনের টাওয়ার লোকেশন আসানসোল। এরপর তা বিভিন্ন রেলস্টেশনে দেখা যায়। পুলিশ বুঝতে পারে, কোনও ট্রেনে রয়েছেন প্রাথমিক এই স্কুলশিক্ষক। বিভিন্ন স্টেশনে জিআরপি রেল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে হরিপাল থানার পুলিশ। তদন্তে পুলিশ আরও জানতে পারে, চম্বল এক্সপ্রেসে যাচ্ছেন দেবকুমার এবং তাঁর ফোনের টাওয়ার লোকেশন রয়েছে মধ্যপ্রদেশে।
তারকেশ্বরের সিআই প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্য একটি মামলার তদন্তে একই সময়ে চম্বল এক্সপ্রেসে হুগলি গ্রামীণ জেলা পুলিশের ধনিয়াখালি থানার একটি টিম গোয়ালিয়র যাচ্ছিল। হরিপাল থানা খবর পেয়ে ওই টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে। তারপর পুলিশ অনেক খোঁজাখুজি করে ট্রেনের মধ্যে ওই শিক্ষকের সন্ধান পায়। তাকে ঝাঁসিতে নামানো হয়। সেখান থেকে সোমবার ভোরে হরিপাল থানায় নিয়ে আসা হয়।
উদ্ধার করে আনা হয়েছে দেবকুমার দাসকে
এদিন ওই শিক্ষককে চন্দননগর আদালতে পাঠানো হয় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য। পুলিশ জানিয়েছে, ওই শিক্ষক তারকেশ্বর যাওয়ার নাম করে কী করে চম্বল এক্সপ্রেসে উঠলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাকে কি সত্যিই অপহরণ করা হয়েছিল, নাকি এর পিছনে অন্য কোনও রহস্য আছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।


Post A Comment:
0 comments so far,add yours