শাসকদলকে তোপ দেগে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "অধিকাংশ কলেজের ছাত্র সংসদ রুমগুলোকে নোংরামির জায়গায় পরিণত করেছে। এক শ্রেণির প্রিন্সিপ্যাল ভয়ে কিছু বলেন না। আরেকদল অযোগ্য হয়ে প্রিন্সিপ্যাল হয়েছে। তাই শাসকদলের ছাত্রদের চটাতে চায় না।"
কলেজে কলেজে চাকরি করছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরাই, ছবি তুলে ধরলেন শুভেন্দু
শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ও TMCP নেতা-নেত্রীদের এইসব ছবি সামনে এনেছেন
কসবাকাণ্ডের পর বিভিন্ন কলেজে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতাদের ‘দাদাগিরি’-র ছবি সামনে এসেছে। কসবাকাণ্ডে অভিযুক্তরাও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। আবার বিভিন্ন কলেজে স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী হিসেবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা রয়েছেন বলে অভিযোগ। এই আবহে মঙ্গলবার ‘ভাইপো গ্যাং’-র তালিকা প্রকাশ করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মহরমের শোভাযাত্রায় অস্ত্র নিয়ে অংশগ্রহণের ছবিও তিনি দেখালেন।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ৫০ জনের ছবি দেখান বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তারপর তিনি বলেন, “যোগ্যরা সুযোগ পায়নি। বিভিন্ন কলেজে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সুযোগ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে।” সেইসব ছবিতে তৃণমূল ও TMCP-র কোন কোন নেতা-নেত্রী কোথায় চাকরি পেয়েছেন সেসব তুলে ধরেন শুভেন্দু। তার মধ্যে যেমন রয়েছেন প্রাক্তন বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার ছেলে পিনাকী সাঁতরা। যিনি বর্তমানে অশিক্ষক কর্মী। আবার TMCP নেত্রী শিল্পা দাস হিরালাল মজুমদার কলেজের কর্মী। আশুতোষ কলেজের TMCP-র প্রাক্তন জিএস উত্তরণ বন্দ্যোপাধ্যায় আশুতোষ কলেজের অস্থায়ী অশিক্ষক কর্মী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন জিএস লগ্নজিতা চক্রবর্তী উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা নাসির বাগানি সোনারপুর কলেজের কর্মী। ৫০ জনের ছবি দেখানোর পর শুভেন্দু বলেন, “চাইলে এমন আরও ৯৫০ জন ছাত্রনেতার ছবি দেখাতে পারি।”
সব পুরনো কর্মীরা মিলে নবান্নে পৌঁছব', শমীকের নেতৃত্বে আবার নতুন উদ্যমে দিলীপ?
টাকা চাইতে যদি কেউ উত্তম কুমারের কাছে যেতেন, কী করতেন মহানায়ক?
ব্লাউজের পাশ থেকে পেনটা খুলে উত্তমের হাতে দিলেন শর্মিলা, চোখ সরাতে পারলেন না 'নায়ক'!তারপর...
শাসকদলকে তোপ দেগে তিনি বলেন, “অধিকাংশ কলেজের ছাত্র সংসদ রুমগুলোকে নোংরামির জায়গায় পরিণত করেছে। এক শ্রেণির প্রিন্সিপ্যাল ভয়ে কিছু বলেন না। আরেকদল অযোগ্য হয়ে প্রিন্সিপ্যাল হয়েছে। তাই শাসকদলের ছাত্রদের চটাতে চায় না।”
আগামী ৯ অগস্ট তিলোত্তমাকে খুনের এক বছর পূর্ণ। ওইদিন নবান্ন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু বলেন, “ওইদিন ২ জায়গা থেকে লাখ খানেক লোক আসবে। বাস আটকালে, ট্রেনে লোক আসবে। সাঁতরাগাছি থেকে লোক আসবে। সেদিন তিলোত্তমার সেন্টিমেন্টে ও তাঁর বাবার আহ্বানে ভিড় করবে মানুষ।” তিলোত্তমার খুনের ঘটনার তদন্তে সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই নিয়ে শুভেন্দু বলেন, “সিবিআই একটি স্বশাসিত সংস্থা। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে জড়াবেন না। কলকাতা হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট রোজ মনিটরিং করেছে আরজি কর মামলা। সিবিআই নিশ্চয়ই ধোয়া তুলসি পাতা হতে পারে না। অভিজিৎ সরকারের ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের লড়াই দেখেছি। বাধ্য হয়েছে পরেশ পালের নাম ঢোকাতে। এখানেও সিবিআই বাধ্য হবে। ১৮ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টে আবার আরজি করের শুনানি রয়েছে। কেউ শিথিলতা দেখলে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারেন।”
আগামী ২১ জুলাই বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযান রয়েছে। ওইদিন ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ দিবসের সমাবেশ রয়েছে। শুভেন্দু বলেন, “উত্তরকন্য়া অভিযানের অনুমতি দেবে না আমি জানি। দুটো কারণ, ২১ জুলাই কোথাও কোনও কিছু হোক এই সরকার চায় না। আমাদের কর্মসূচির কাছে ওদের ২১ জুলাই যদি ফ্লপ হয়ে যায়, তাই এটা করতে চায় না। মহামান্য আদালত অনুমতি দিলে কলকাতা থেকে ৬০০ কিমি দূরে কর্মসূচি সফল হবে।”
তিনি বারবার হিন্দু ভোটের কথা বলেন। অন্যদিকে, রাজ্য সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই শমীক ভট্টাচার্য মুসলিমদের বার্তা দিয়েছেন। এই নিয়ে এদিন শুভেন্দু বলেন, “ব্যক্তিগত অনুভূতি। সেই কথা থেকেই বলছি। আমি কোনও সহকর্মী নিয়ে মন্তব্য করি না। পার্টি পার্টির কথা বলবে। আমার কথার সঙ্গে দল বা কোনও সরকারকে জড়াবেন না। আমি আমার অনুভূতি, অভিজ্ঞতা থেকে বলেছি। যেই বুথে মুসলিম ১০০ শতাংশ, সেখানে একটাও ভোট পাওয়া যাবে না। সায়েন্স সিটিতে যখন বলেছিলাম, তখনও বেরিয়ে বলেছিলাম, এটা আমার ব্যক্তিগত মত। এখানে কোনও রাজনৈতিক দলকে জড়াবেন না।” এরপরই তিনি বলেন, “মুসলিমদের উপর অত্যাচার করছে এই সরকার। তার প্রমাণ তামান্নার ঘটনা। পুলিশ সরিয়ে দিন, মুসলিম এলাকায় বিজেপি জিতবে না, তৃণমূলও জিততে পারবে না।” পুলিশকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে মূল সমস্যা পুলিশ। পুলিশ নিরপেক্ষ হলে সব কিছুর সমাধান হবে।”
তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কলেজে কলেজে চাকরি পাওয়া নিয়ে শুভেন্দুর অভিযোগের জবাব তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী যখন তৃণমূলে ছিলেন, তখন তাঁর এলাকার কলেজেগুলিতে আপনার বসিয়ে দেওয়া লোকজন ছিল। তাঁরা আপনার নামে জয়ধ্বনি দিত। তখন অসুবিধা ছিল না। এখন যদি সমস্ত কলেজের ছাত্রদের শুভেন্দুবাবু বলেন, সব কলেজেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী রয়েছেন। তাহলে তো ধরে নিতে হবে যে রাজ্যের ছাত্র, যুবরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে আকৃষ্ট হচ্ছেন। এবং বিজেপি ও বামেদের কেউ নেই যাঁকে দেখে ছাত্র-যুবরা আকৃষ্ট হতে পারেন।”


Post A Comment:
0 comments so far,add yours