সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৫ জুন। কিন্তু ২৪ জুন রাতে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেদের দলবল নিয়ে বালিগঞ্জের অবস্থিত মেয়েদের কলেজ 'কলকাতা গার্লস বিটি কলেজে'-র ভিতর প্রবেশের চেষ্টা করেছিল।


২৫ জুন গণধর্ষণের আগের দিন অভিযুক্ত কী করেছিল, মুখ খুললেন আর এক কলেজের প্রিন্সিপাল
কী বললেন অধ্যক্ষা

গণধর্ষণের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের দাপুটে যুব নেতার। কলেজ ছাত্রীকে ইউনিয়ন রুমের ভিতরে নিয়ে গিয়ে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে। ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। অভিযুক্ত গ্রেফতার হতেই গুচ্ছ-গুচ্ছ অভিযোগ উঠে আসছে তাঁর বিরুদ্ধে। এবার তাঁর আরও এক কুকীর্তি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন কলকাতার আরও এক গার্লস কলেজের অধ্যক্ষা। ধর্ষণের ঘটনার আগের দিন কী করছিলেন অভিযুক্ত সেই বিষয়ে মুখ খুললেন তিনি।


সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২৫ জুন। কিন্তু ২৪ জুন রাতে গণধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তি নিজেদের দলবল নিয়ে বালিগঞ্জের অবস্থিত মেয়েদের কলেজ ‘কলকাতা গার্লস বিটি কলেজে’-র ভিতর প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। অধ্যক্ষা মাকসুদা খাতুন জানান, শুধু ২৪ জুন নয়, তিন মাস আগেও সে একই ভাবে কলেজের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। সেই সময় তাঁর সঙ্গে আবার একটি মেয়ে ছিল বলে দাবি অধ্যক্ষার। সন্ধ্যার পর এসে জোর করে কলেজের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে অভিযুক্ত।

এরপর ২৪ জুনও দলবল নিয়ে হাজির হন তিনি। কিন্তু সেই সময় অভিযুক্তের সঙ্গে কোনও মহিলা ছিল কি না তা জানা যায়নি। সেই সময় ‘বিটি কলেজের’ নিরাপত্তারক্ষী রুখে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকেও হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। নিজেকে তৃণমূলের বড় নেতা বলে দাবি করে চাকরি খেয়ে নেওয়ার ভয় দেখায় বলে অভিযোগ। তবে, নিরাপত্তারক্ষী নিজের অবস্থানে অনড় থাকায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় অভিযুক্ত। অধ্যক্ষা বলেন, “২৪ তারিখে ও ঢোকার চেষ্টা করে। তখন আমাদের গার্ড বাধা দেয়। বারবার খালি বলছিল পুরোনো বাথরুমটা ব্যবহার করব। আমরা তো নির্দেশ দিয়েই ছিলাম যে কলেজ ছাত্রী বাদ দিয়ে বাইরের কেউ ভিতরে ঢুকতে পারবে না। নিরাপত্তারক্ষী রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সেই সময়।”

বস্তুত, ২০২০ সালের আগে পর্যন্ত ‘বিটি কলেজের’ ক্যাম্পাসের ভিতরেই ‘সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের’ ক্যাম্পাস ছিল। ওই ক্যাম্পাসের ভেতরে ভাড়া নিয়ে সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাস চলত। ২০২০ কসবার কে এন সেন রোডে সাউথ কলকাতা ল কলেজ স্থানান্তরিত হয়ে যায়।

বিটি কলেজের প্রিন্সিপাল বললেন, “ল কলেজের প্রাক্তনী হিসেবে অভিযুক্ত মাঝেমধ্যেই মেয়েদেরই কলেজে বলপূর্বক ঢোকার চেষ্টা করত।” প্রিন্সিপাল এও বললেন, “অভিযুক্ত এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের দাপটের কারণে আমরা আমাদের মেয়েদের কলেজের সুরক্ষা বাড়িয়েছি। সিসিটিভি এবং অন্যান্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করেছি। আমি আশঙ্কা করছি, যে ঘটনা সাউথ কলকাতা ল কলেজের ভিতর অভিযুক্ত যা করেছে বলে অভিযোগ, এই একই ঘটনা বিটি কলেজের ভিতরে করার চেষ্টা করত ।

তিনি বলেন, “২০২০ সালের আগে যখন একই ক্যাম্পাসে দুটি কলেজ ছিল, তখন নিত্যদিন মনোজিৎ এবং তার সাঙ্গপাঙ্গরা ক্যাম্পাসের ভেতরে অশান্তি লাগিয়ে রাখত। শিক্ষিকারা এবং বিটি কলেজের ছাত্রীরা রীতিমতো অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। সাউথ কলকাতা ল কলেজের ক্যাম্পাসের ভিতরে নিত্যদিন মারপিটে জড়িয়ে পড়ত অভিযুক্ত। সেই অশান্তি আছড়ে পড়ত আমাদের কলেজের ক্যাম্পাসের গায়ে। বারবার এই ঘটনার জন্যই দুটি কলেজ আলাদা হয়।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours