এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, "যিনি ছবি তুলছেন তিনি তো জানেন না। আর শ্বেতা গিয়ে ওঁর পাশে বসত।" আর এক বাসিন্দা বলেন, "আমরা সব জানতাম। তাও বলতে পারিনি। অনেক প্রভাবশালী লোকজন আসতেন।
রাতেও আসতেন তাঁরা। আর ওর বাড়ির সামনে গাড়ি পার্কিং করে রাখতেন....আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনি।"
'...রাতে আসতেন অনেক প্রভাবশালী', পর্নোগ্রাফিকাণ্ডে নাম জড়ানো শ্বেতার বাড়িতে বড় নেতাদের আনাগোনা?
শ্বেতা খান
শ্বেতা খান আর আরিয়ান খান, মা-ছেলের কীর্তিতে স্তম্ভিত সকলে। মোটা টাকার লোভ দেখিয়ে হাওড়ায় পর্নোগ্রাফি বানানোর অভিযোগ তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে খবর সামনে আসতেই উধাও তাঁরা। গুচ্ছ-গুচ্ছ অভিযোগ উঠলেও শ্বেতা আর আরিয়ানের খোঁজ এখনও মেলেনি। এই আবহে অভিযুক্তরা যে পাড়ায় থাকতেন, সেখানকার একাধিক ব্যক্তি মুখ খুললেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে যোগ ছিল শ্বেতা খান আর আরিয়ানের। পুলিশের সঙ্গেও মা-ছেলের যোগ নিয়ে সরব তাঁরা।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, “ওরা প্রচুর প্রভাবশালী। তৃণমূলের তাবড় নেতা থেকে ফাঁড়ি পুলিশ সকলের সঙ্গে ওঠাবসা। একটা কথা বলব, অমনি এমন কেসে ফাঁসাবে যে চোদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে দেবে।” এলাকারই আর এক ব্য়ক্তি বলেন, “বাইরের নেতারা ওকে পাত্তা দিত। কিন্তু এখানকার স্থানীয় নেতারা পাত্তা দিত না।”
নেতাদের সঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ওই ব্যক্তি আরও বলেন, “যিনি ছবি তুলছেন তিনি তো জানেন না। আর শ্বেতা গিয়েই ওঁদের পাশে বসত।” এ দিকে, শ্বেতার ফেসবুক প্রোফাইলে গিয়ে দেখা গেল সেখানে রয়েছে লোকসভা ভোটের প্রচারের কয়েকটি ছবি। সেখানে তিনি শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের তৎকালীন তৃণমূল প্রার্থী অধুনা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে দেওয়াল লিখন করছিলেন। আর এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা সব জানতাম। তাও বলতে পারিনি। অনেক প্রভাবশালী লোকজন আসতেন। রাতেও আসতেন তাঁরা। আর ওর বাড়ির সামনে গাড়ি পার্কিং করে রাখতেন….আমরা ভয়ে কিছু বলতে পারিনি।”
এ প্রসঙ্গে বাঁকড়ার পঞ্চায়েত প্রধান তথা তৃণমূল নেতা আখতার মোল্লা বলেন, “শ্বেতাকে আমরা ফুলটুসি বলে চিনি। এই সব কাজ তো আমাদের সামনে করত না… গোপনে করত। নয়ত ওর স্টাইল-চলাফেরা, কথাবার্তা বলার মতো নয়।” এ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষ বলেন, “সমাজের মধ্যে ভাল কাজ যেমন হয়, তেমনই কিছু বদমাইস লোক আছে। বিভিন্ন চক্র কাজ করে। সেগুলো কমিয়ে আনা হচ্ছে। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। খারাপ ঘটনা সব সময় খারাপ। কিন্তু তার সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন বা দলের বিষয় নয়।” এরপর শ্বেতার সঙ্গে নেতাদের ছবি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, “তৃণমূল বড় দল। তাঁর সঙ্গে যাঁরা আছে কে কোথায় কার সঙ্গে মিশে কী করছেন তার সঙ্গে গোটা দলের তুলনা করা চলে না।”
কী ভাবে প্রকাশ্যে এল এই ঘটনা?
উল্লেখ্য, গতকাল অর্থাৎ রবিবার এক তরুণীর বাড়ির লোকজন পানিহাটি থানায় অভিযোগ করেন আরিয়ানের বিরুদ্ধে। তাঁদের দাবি, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের নামে ডোমজুড়ে বার ড্যান্সারের কাজ করানোর হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। তেইশ বছরের ওই তরুণী এও জানান, ওখানে থাকার সময়েই তিনি শুনতে পান তাঁকে মেরে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে। সবটাই হবে রাতের অন্ধকারে। এ কথা শোনা মাত্রই ওই তরুণী পালিয়ে আসেন। তাঁকে পালিয়ে আসতে সাহায্য করে আরিয়ানেরই ঠাকুমা। মারধরের জেরে বর্তমানে ওই তরুণী হাসপাতালে ভর্তি। এরপর তদন্ত এগোতেই আরিয়ান ও শ্বেতার একধিক কাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসে।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours