ধৃত আজমলের বাড়ি থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ধর্মীয় বই, একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে এসটিএফ। ধৃত ২ জনকে এদিন রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়।
ভারত-পাক চরম উত্তেজনার আবহে বাংলায় গ্রেফতার ২ সন্দেহভাজন জঙ্গি
বীরভূম থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করল বেঙ্গল এসটিএফ
বীরভূম: পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহেই জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে বীরভূম থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করল বেঙ্গল এসটিএফ। ধৃতদের নাম আজমল হোসেন এবং সাহেব আলি খান। বছর আঠাশের আজমলের বাড়ি নলহাটির চণ্ডীপুর গ্রামে। আর বছর আঠাশের সাহেবের বাড়ি পাইকর থানার রুদ্রনগর গ্রামে।
সাহেব আলি খান পেশায় দর্জি। আর আজমল হোসেন পেশায় হাতুড়ে ডাক্তার। গতকাল গভীর রাতে কলকাতা থেকে এসটিএফের একটি দল বীরভূম পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করে। তবে কী কারণে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলতে চাননি এসটিএফ ও জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা।
ধৃত আজমলের বাড়ি থেকে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ধর্মীয় বই, একটি ল্যাপটপ, একটি মোবাইল সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করেছে এসটিএফ। ধৃত ২ জনকে এদিন রামপুরহাট আদালতে তোলা হয়। ধৃত আজমলের বাবা জার্জেশ মণ্ডল বলেন, “আমার ছেলের কাছে মাঝে মাঝে আসত সাহেব। সে-ই বই দিয়ে যেত।” তাঁর ছেলে কোনও জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত থাকতে পারে না বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, “আমার ছেলে কখনই বাংলাদেশে যায়নি। খুবই ভাল ছেলে। কোনও নেশাও করে না।”
STF সূত্রে খবর, ধৃতরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিনের সক্রিয় সদস্য। JMB- র হয়ে মতাদর্শ প্রচার এবং সংগঠনের কাজের জন্য নতুন সদস্য রিক্রুটমেন্ট থেকে শুরু করে বেশ কিছু কাজের দায়িত্ব ছিল ধৃতদের উপরে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যুবকদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করে সংগঠনের কাজে যুক্ত করার কাজ চালাচ্ছিল দু’জনে। নতুন নতুন সদস্য নিয়োগ করে তাঁদের কাজে লাগিয়ে দেশ বিরোধী কাজ, এমনকি ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করাই ছিল মূল লক্ষ্য।
তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন, ধৃতরা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের নির্দিষ্ট একটি মডিউলের সদস্য। তারা অত্যাধুনিক এনক্রিপ্টেড মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। পাশাপশি ওই এনক্রিপ্টেড মাধ্যম ব্যবহার করেই জিহাদি প্রচারের কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল। ধৃতরা ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার পক্ষে ক্ষতিকারক কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি ও স্থানকে টার্গেট করার পরিকল্পনা করেছিল।
STF সূত্রে খবর, ধৃত আজমল হোসেন আগে বিভিন্ন সময়ে জিহাদি কার্যকলাপের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করে। ভারতে থাকলেও উপমহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল বলেও তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
ধৃতদের আরও কয়েকজন সহযোগী বিভিন্ন জায়গায় আছে বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। তাদের সহযোগিতায় আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করেছিল এই দু’জনে। পাশাপশি ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’-র আদর্শ প্রচার এবং বিস্ফোরক প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করেছিল এই ২ জন। ‘গাজওয়াতুল হিন্দ’ শব্দের অর্থ ভারতে সশস্ত্র জেহাদ। ফলে এই ২ জন সশস্ত্র জেহাদের প্রচারে যুক্ত ছিল বলে গোয়েন্দাদের বক্তব্য।
Post A Comment:
0 comments so far,add yours