এরপর শনিবার বৈঠক হয় কোর কমিটির। সেখানে কোর কমিটির সভাপতি হন অনুব্রত মণ্ডল। অর্থাৎ, ৬ থেকে বেড়ে বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা হল ৭ জন৷ সভাপতি হলেও তা নামেই। ঠিক যেমন ইংল্যান্ডের রাজা-রানি ক্ষমতা ভোগ করেন তেমন ক্ষমতাই ভোগ করবেন কেষ্ট।
সৌরভ গুহ ও হীমাদ্রি মণ্ডলের রিপোর্ট
বোলপুর: ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের স্ত্রী ক্যামেলিয়া বর্তমানে ব্রিটেনের রানি। তবে তিনি ‘কুইন কনসর্ট’ পদে রয়েছেন। তবে রাজা হোক বা রানি। নামেই তাঁরা সে দেশের প্রধান। কিছু কিছু সীমিত ক্ষমতা ভোগ করলেও আসল ক্ষমতা কিন্তু রয়েছে ব্রিটেন সরকারের হাতে। হঠাৎ কেন উঠল এই প্রসঙ্গ? আসলে রাঙামাটির জেলায় নিজের বাসভূমে অনুব্রত মণ্ডল ফিরতেই পেলেন পদ। যার পোশাকি নাম ‘চেয়ারপার্সন’! কিন্তু আদতে ক্ষমতা খর্ব করা হল তাঁর।
এক সময় বীরভূমে অনুব্রত মণ্ডলের নামে বলা হয় ‘বাঘে-গরুতে একঘাটে জল খেতো’ দাপুটে এই তৃণমূল নেতার ভয়ে ‘কাঁপত’ বিরোধীদের একাংশ। ভোটের আগে তাঁর একের পর এক উক্তি নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। তারপর বদলালো সময়। গরুপাচার মামলায় তিহাড় যেতে হল তাঁকে। সম্প্রতি ফিরেও এসেছেন। কিন্তু ততদিনে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। মাথা উঁচিয়ে উপরে উঠেছে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠী। শুধু তাই নয়, কেষ্ট অনুপস্থিতি যে কোর কমিটি গঠন করেছিলেন সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত ফিরে আসতেই ফোনে তিনি পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন, কোর কমিটিকে নিয়ে চলতে। অর্থাৎ কোথাও একটা বার্তা দিয়ে সুপ্রিমো বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আর একা একা কাজ করা যাবে না। চলতে হবে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে। যদিও, জেলায় ফেরার পর থেকে অনুব্রত এক সঙ্গে চলার বার্তা দিলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি।
এরপর শনিবার বৈঠক হয় কোর কমিটির। সেখানে কোর কমিটির সভাপতি হন অনুব্রত মণ্ডল। অর্থাৎ, ৬ থেকে বেড়ে বীরভূম জেলার কোর কমিটির সদস্য সংখ্যা হল ৭ জন৷ সভাপতি হলেও তা নামেই। ঠিক যেমন ইংল্যান্ডের রাজা-রানি ক্ষমতা ভোগ করেন তেমন ক্ষমতাই ভোগ করবেন কেষ্ট।
জানা যাচ্ছে, সভাপতি হলেও হিসেবে একক কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না কেস্ট। কোর কমিটির আর ছয় সদস্যদের মতোই তিনিও সম্মিলিত সিদ্ধান্ত মেনে চলবেন। অর্থাৎ অবসান হলো বোলপুর পার্টি অফিসের গরিমা। এক সময় এই পার্টি অফিস থেকেই জেলা ‘চালাতেন’ কেষ্ট। এখন থেকে জেলার বিভিন্ন পার্টি অফিসে বসবে কোর কমিটির বৈঠক। আগামী কোর কমিটির বৈঠক ১৫ ডিসেম্বর রামপুর হাট পার্টি অফিসে হবে ।
শনিবার বোলপুর পার্টি অফিসের বিরুদ্ধে বৈঠকে অভিযোগ করলেন কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখ। নানুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিধায়ক বিরোধী লোকদের মদত দেওয়া হচ্ছে বোলপুর পার্টি অফিস থেকে। অভিযোগ কাজলের। এসব করা যাবে না। সিদ্ধান্ত কোর কমিটির। এর পাশাপাশি ব্লক এ ব্লকে অনুষ্ঠানে কেউ একা যেতে পারবেন না । অনুব্রত ও কোর কমিটি এক সঙ্গেই যাবে।
সূত্রের খবর এ দিন বৈঠকে অনুব্রত কোর কমিটির সদস্য বাড়ানার প্রস্তাব দেন। তবে বর্ধিত কোর কমিটির ভাবনা নাকচ করলেন অন্য সদস্যরা । কোর কমিটির সংখ্যা বাড়ানোর প্রশ্নই নেই। কারণ কমিটি তৈরি করেছেন দলনেত্রী নিজে। কেস্টর সামনেই সাফ জানান কোর কমিটি সদস্যরা।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে কাজল বলেন,”আমি আগেও বলেছি, আজও বোলপুরে তৃণমূল পার্টি অফিসে বসে বলছি অনুব্রত মণ্ডল আমার রাজনৈতিক গুরু, আমার অভিবাবক। আমি তাঁর হাত ধরে রাজনৈতিতে প্রবেশ করেছি৷ আমাদের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই৷ কোর কমিটির বৈঠকে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার পরিকল্পনা হয়েছে।”
Post A Comment:
0 comments so far,add yours