বাংলাদেশে একদিকে চলছে তাপপ্রবাহের খেলা, সঙ্গী হয়েছে অসহনীয় লোডশেডিং। আগেই প্রাথমিক স্কুলগুলির পঠনপাঠন বন্ধ করা হয়েছিল, বুধবার মাধ্যমিক স্তরের পঠনপাঠনও বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল বাংলাদেশ সরকার।

Bangladesh: গরমের জেরে বাংলাদেশে প্রাথমিকের পর বন্ধ মাধ্যমিক স্কুলওপ্রতীকী ছবি
ঢাকা: অসহনীয় গরমের সঙ্গী বিদ্যুৎ বিপর্যয়। বাংলাদেশকে এখন ‘লোডশেডিংদেশ’ বললেও অত্যুক্তি হবে না। আশার কথা শোনাতে পারেনি সেই দেশের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। বরং জানিয়েছে, আগামী কয়েক দিনে লোডশেডিং আরও বাড়বে। এই অবস্থায় বন্ধ রাখা হল বাংলাদেশের সকল মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। বুধবার (৭ জুন), সেই দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে, মাধ্যমিক স্তরের সকল সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে বৃহস্পতিবার (৮ জুন) পঠনপাঠন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগেই প্রাথমিক স্কুলগুলির পঠনপাঠন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এবার একই পথে হাঁটল মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা দফতরও।


প্রথম দফায় শুধুমাত্র বৃহস্পতিবারই (৮ জুন) মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরের দুই দিন, অর্থাৎ, শুক্র ও শনিবার স্কুলগুলিতে সাপ্তাহিক ছুটি থাকে। এরপরও তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকলে, পরবর্তী সময়ে আরও লম্বা সময়ের জন্য পঠনপাঠন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে অবশ্য লোডশেডিং-এর বিপদের কোনও উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের আবহাওয়া দফতর থেকে দেশজুড়ে মৃদু থেকে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা দফতরের মহাপরিচালক, অধ্যাপক নেহাল আহমেদ জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গরমের কারণেই পঠনপাঠন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা বিভাগ।

এর আগে সোমবার (৫ জুন), সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলির প্রাথমিক শাখার ক্লাস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ৫ থেকে ৮ জুন পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরের পঠন-পাঠন বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছিল। তীব্র তাপপ্রবাহের প্রেক্ষিতে ছাত্রছাত্রীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা কথা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রক। প্রথমে শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিরই পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হয়েছিল। এর পর কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের উদ্যোগেই ছুটি ঘোষণা করে। পরে, সরকারের পক্ষ থেকে বেসরকারি স্কুলগুলির জন্যও একই নির্দেশ জারি করা হয়।


এদিকে, প্রচণ্ড গরমে এদিনই বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার এক স্কুল ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ত ওই ছাত্রী, নাম উম্মে হাবিবা আক্তার। অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। জানা গিয়েছে, শ্রেণিকক্ষেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন হাবিবা। প্রধান শিক্ষক মহম্মদ সেলিম জানিয়েছেন, অসুস্থ হাবিবাকে তাঁর সহপাঠীরা অফিস রুমে নিয়ে এসেছিল। দুই শিক্ষক তাঁকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় অসুস্থ হাবিবার মুখ দিয়ে লালা ও ফেনা পড়ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসার পর, হাবিবাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন সেখানকার চিকিৎসকরা। কিন্তু, ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours