একটি ছবি, আর তা থেকেই জন্ম নিয়েছে হাজারও বিতর্ক। ছবির নাম 'দ্য কেরালা স্টোরি'। পরিচালক সুদীপ্ত সেন। বাঙালি পরিচালকের ছবিই কি না নিষিদ্ধ বাংলায়।

The Kerala Story: 'ছবিটা দেখেই ক্ষমা চেয়েছে', মুখ খুললেন বাঙালি পরিচালক সুদীপ্ত সেনআদাহ শর্মা।
একটি ছবি, আর তা থেকেই জন্ম নিয়েছে হাজারও বিতর্ক। ছবির নাম ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। পরিচালক সুদীপ্ত সেন। বাঙালি পরিচালকের ছবিই কি না নিষিদ্ধ বাংলায়। শুধু বাংলাতেই নয়, তামিলানাড়ুতেও এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চলছে রাজনৈতিক তরজাও। এরই মধ্যে এই ছবি নিয়ে মুখ খুললেন পরিচালক সুদীপ্ত। তাঁর দাবি, প্রতিবাদ-বিরোধ তাঁরাই করছেন, যারা এখনও পর্যন্ত এই ছবি দেখেনইনি। তিনি বলেন, “ছবিটির টিজার বের হওয়ার পর একটি ছেলে ক্রমাগত আমার সহ-প্রযোজককে গালিগালাজ করে গিয়েছে। কিন্তু আমাদের ছবিটি দেখার পর সে নিজে মেসেজ করে ক্ষমা চেয়েছে।” সুদীপ্ত দাবি করেছেন, তিনি নিজেও ক্রমাগত নোংরা মেসেজ পেয়েছেন। তাঁর আরও সংযোজন, “আদালতের কাছে আমাদের তরফে দু’টি লিখিত বক্তব্য দেওয়া রয়েছে। যদি সে দু’টি দেখেন, আপনারা হেসে ফেলবেন।”


কী রয়েছে এই ছবিতে? কেনই বা তা নিয়ে এত বিতর্ক? ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম শালিনী উন্নিকৃষ্ণণ। জন্মসূত্রে হিন্দু, শালিনী পাকচক্রে কেন ফতিমা হন বা হতে বাধ্য হন, তা নিয়েই ছবি। শুধু তাই-ই নয়, সিরিয়ার জঙ্গি বাহিনীতে তাঁর যোগদান, অসহায়তা, দুর্বিষহ জীবনই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন তিনি, এমনটাই দাবি করেছেন সুদীপ্ত। ট্রেলারে দাবি করা হয়েছে, কেরল থেকে ৩২ হাজার মহিলা ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য হয়েছেন। পরিচালক ট্রেলারে আরও দাবি করেছেন, শুধু হিন্দু মহিলারাই নন, অন্য ধর্মের মহিলাদেরও এই ধর্মান্তকরণ প্রক্রিয়ায় ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই এই দাবি নিয়ে বিতর্ক চরমে উঠেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ফিল্মটি দেখানো হলে রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই, এই ফিল্মটির প্রদর্শনীর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে। অন্যদিকে, ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ছবিটি একটি সন্ত্রাসবাদী ষড়যন্ত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এই ছবি সন্ত্রাসবাদের কুৎসিত সত্যিকে তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটমুখী কর্ণাটকের বেল্লারিতে এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি মুখ খুলেছিলেন ছবি নিয়ে। বলেছিলেন, “সন্ত্রাসবাদের উপর নির্মিত চলচ্চিত্রের বিরোধিতা করছে কংগ্রেস। তারা সন্ত্রাসবাদীদের পক্ষ নিয়েছে। ভোট ব্যাঙ্কের জন্য সন্ত্রাসবাদকে ঢাল করেছে কংগ্রেস। ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটি সমাজে, বিশেষ করে কেরলের মতো এক পরিশ্রমী, মেধাবী এবং বুদ্ধিজীবী মানুষের সুন্দর দেশে, সন্ত্রাসবাদের পরিণাম প্রকাশ করার চেষ্টা করেছে। কংগ্রেস পার্টি এখন ফিল্মটি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করছে এবং সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন করছে। তারা শুধু বিভিন্ন জিনিস নিষিদ্ধ করতে এবং উন্নয়নকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করতে জানে। এমনকি আমার ‘জয় বজরংবলী’ উচ্চারণেও এই পার্টির সমস্যা আছে।” শুধু মোদী নন, যোগী-রাজ্যেও এই ছবিকে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। একরাজ্যে ছবি নিষিদ্ধ, অন্যরাজে ছবিটিকে করমুক্ত ঘোষণা, নেটিজেনদের একাংশের মন্তব্য ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে বিতর্কের স্মৃতিই উস্কে দিচ্ছে এই ছবি…বিতর্কের গতিপথ কোনদিকে এগোয়, আমআদমি থেকে রাজনৈতিক নেতার নজরে সেটিই।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours