এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চে হাজির দেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা।


বাজেয়াপ্ত করা মাদক সময়মতো পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে রাজ্যের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। একটি মাদকের পরীক্ষার ব্যবস্থা কবে কার্যকর হবে রাজ্যের ফরেনসিক সাইন্স ল্যাবরেটরিতে, তার জবাব পেতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকাকে ব্যক্তিগত হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ ছিল, ২৪ জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রসচিবকে আদালতে হাজির থেকে জানাতে হবে মেটা ইনফেটা মাইন নামে ওই বিশেষ মাদকটির পরীক্ষা শুরুর ব্যবস্থা কেন এতদিনেও হয়নি রাজ্যের ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে। সেই মতো এদিন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি অজয় কুমার গুপ্তার ডিভিশন বেঞ্চে হাজির দেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বি পি গোপালিকা।



প্রসঙ্গত, একটি মাদক মামলায় ধৃতের জামিন আটকে গিয়েছিল এই মেটা ইনফেটা মাইন নামক মাদকের পরীক্ষার ব্যবস্থা না হওয়ার কারণে। পরীক্ষা না হওয়ার কারণ হিসেবে রাজ্যের তরফে সেই সময় জানানো হয়েছিল, এই মাদক পরীক্ষার যে যন্ত্রের দরকার তা রাজ্যের ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে নেই। সেই কথা শোনার পরই আদালত ওই যন্ত্র আনার জন্য অর্থ বরাদ্দ করার নির্দেশ দিয়ে সময় বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু এখন মাদক পরীক্ষার জন্য দুটি যন্ত্র কেনা হলেও, পরীক্ষার জন্য যে রাসায়নিক দরকার না পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতে এমনই জানালেন রাজ্যের আইনজীবী।

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে বেশ কড়া ভাষায় প্রশ্ন করেন, রাজ্য কি চাইছে মাদক পরীক্ষা না করে মামলাগুলি ঝুলিয়ে রাখতে? এই পরীক্ষা কি পৃথিবীতে প্রথম হচ্ছে? সাধারণ মাদক পরীক্ষায় এত উদাসীনতা কেন? বিচারপতি বাগচির মন্তব্য, পরীক্ষা আটকে থাকলে মামলা আটকে থাকছে। এটা চলতে পারে না। অতঃপর তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত এই পরীক্ষা করে আদালতে রিপোর্ট জমা দিতে হবে স্বরাষ্ট্রসচিবকে। নির্দেশ কার্যকর করে চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিবকে রিপোর্ট দিতে নির্দেশ দিল আদালত।

বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির পর্যবেক্ষণ, “মাদক পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের কোনও নির্দেশিকা নেই, এটা হতে পারে না। এ রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমানা রয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন সময় মাদক পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে। তার পরও রাজ্যের কেন এই ঢিলেমি? এই ধরনের সাধারণ মাদক পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে কী আর বলব?”

রাজ্যের আইনজীবী এদিন আদালতে জানান, মাদক পরীক্ষার জন্য দু’টি যন্ত্র কিনেছে সরকার। কিন্তু পরীক্ষার জন্য যে রাসায়নিক দরকার তা পাওয়া যাচ্ছে না। গাজিয়াবাদে যোগাযোগ করেও সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কথা শুনে বিচারপতি বাগচির প্রশ্ন, তাহলে এটা কি ধরে নিতে হবে যে রাসায়নিক প্রয়োজন পরীক্ষা করার জন্য তা দেশে নেই? জবাবে রাজ্যের আইনজীবী অবশ্য জানান, বিষয়টি তেমন নয়। তবে যেখান থেকে আনা হয় সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours