তাঁর কাহিনি নিয়ে একটা পুরো সিরিজ হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই তিনি খুব খুশি। সেই চরিত্রে অভিনয় করছেন সুস্মিতা সেন, তাতে তিনিও আরও খুশি।


একজন ট্রান্সজেন্ডারের জীবনকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলা কঠিন কাজ, আর সেই কঠিন কাজটি করার দায়িত্ব সুস্মিতা সেন (Sushmita Sen) নিয়েছেন, এটা দেখে খুব উত্তেজিত শ্রীগৌরি সাওয়ন্ত (Shreegauri Sawant)। যাঁর জীবনকে পর্দায় বাস্তবায়িত করবেন সুস্মিতা। শ্রীগৌরি ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার নিয়ে লড়াই করেন। যিনি নিজের অতীত নিয়ে কথা বলতে কখনও পিছপা হননি। তাঁর কাহিনি নিয়ে একটা পুরো সিরিজ হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই তিনি খুব খুশি। সেই চরিত্রে অভিনয় করছেন সুস্মিতা সেন, তাতে তিনিও আরও খুশি। সিরিজের নাম ‘তালি’। সেই সিরিজ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শ্রীগৌরি জানিয়েছেন কীভাবে সুস্মিতা শুধু তাঁর লুককেই নয়, ঘড়ি পরার স্টাইলকেও গ্রহণ করেছেন সেটাও তিনি সিরিজের প্রথম লুকে খেয়াল করেছেন।


তালি পরিচালনা করছেন মারাঠি সিনেমা জনপ্রিয় পরিচালক রবি যাদব। সাওয়ন্ত সড়ক ছবিতে সদাশিব আম্রেকরে এমন একটি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সেই কথা মনে করে মন্তব্য করে যে, সিনেমায় বিচ্ছিন্নভাবে তাঁদের নিয়ে ছবি হয়েছে বা হয়, তবে পুরো একটা সিরিজ এই প্রথমবার। সেই সঙ্গে একজন অভিনেত্রী এমন একটা চরিত্র করছেন, তাতে তিনি সত্যি খুব খুশি। তিনি বলেন, “সুস্মিতা সেন আমার চরিত্রে অভিনয় করছেন এটা যখন আমি আমার গুরুকে বলেছিলাম, তিনি প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি। পর্দায় একজন অন্যলিঙ্গের চরিত্রে অভিনয় করা সহজ নয়। এর জন্য অনেক সাহসের প্রয়োজন হয়। সুস্মিতাকে হ্যাটস অফ, যে তিনি এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন”। সুস্মিতার লুক পছন্দ হয়েছে গৌরির। বিশেষ করে বড় টিপ, রুদ্রাক্ষের মালা আর তাঁর ঘড়ি পরার স্টাইল তাঁকে ছুঁয়ে গিয়েছে।

শ্রীগৌরি সিনেমার বিষয় নিয়ে নিজের মত হিসেবে উল্লেখ করেছেন যে তাঁদের এমনভাবে দেখানো হোযাতে সমাজে একটা গ্রহণযেগ্যতা তৈরি হয়। তার মতে, “সাধারণ মানুষ হিসেবে দেখাও আমাদের। তবেই লোকে আমাদের চারকি দেবে। ট্রান্সজেন্ডারকে একজন অন্ধকার চরিত্র বা এমন একজন দেখানোর প্রয়োজন নেই যাঁর জীবনে শুধু কষ্ট আছে। আমরা কোন অসহায় নারী নই বা ভগবান নই, যাঁরা শুধু আশীর্বাদ করতে পারে। আমাদের একজন সাধারণ মানুষ হিসেবেই চিত্রিত করুন। যাঁদের সম্পর্ক রয়েছে, কেরিয়ার রয়েছে”।

ট্রান্সজেন্ডারদের দত্তক পাওয়ার অধিকার নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে একটি পিটিশন দিয়েছেন তিনি। এখনও তাঁদের লড়াই অনেক বাকি বলেই মনে করেন শ্রীগৌরি সাওয়ন্ত। তাঁর মতে, “স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন হচ্ছে, অথচ আজও আমাদের লড়াই চলছে। এখনও ডাক্তাররা আমাদের চিকিৎসা করতে চান না। কোথাও চাকরিতে নিতে চায় না। আমাদের নিয়ে অদ্ভুত একটা ট্যাবু কাজ করে। আমার বাবা গত বছর মারা গিয়েছেন। সেই খবর পর্যন্ত আমার ভাই আমাকে দেয়নি। শুধু তাই নয়, সম্পত্তির কাগজপত্র থেকে আমার নাম পর্যন্ত সরিয়ে দিয়েছে। এটা যদি কেউ করতে পারতেন, তা আমার বাবা। আমাদের বিশাল কিছু সম্পত্তি নেই। চাইলেই আমি সব লিখে দিতাম। ট্রান্সজ্ন্ডার বলে নাম সরিয়ে দেওয়ার কোন অধিকার তোমার রয়েছে, যখন আমি বেঁচে আছি। পরবর্তী প্রজন্মকে তাঁর অধিকার আর মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে আরও ভাল আইন দরকার। সেই লড়াই করে যাব তাঁদের জন্য। যেদিন রাস্তা আমাদের মতো মানুষদের ভিক্ষে নেওয়া বন্ধ করতে পারব, সেদিন আমাদের লড়াই থামবে”।


Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours