উঠে গিয়েছে জমিদারি প্রথা। বর্তমানে সম্পূর্ণ পুজোর দেখাশোনা করেন জমিদারের এক সেবায়েত ও তার বংশধরেরা।


দক্ষিণ দিনাজপুরের (Dakshin Dinajpur) প্রাচীন কালীপুজোর কথা উঠলেই সবার আগে শোনা যায় কুশমণ্ডি ব্লকের আমিনপুরের মা মাটিয়া কালীর কথা (Kali Puja 2022)। দীর্ঘ প্রায় ৬০০ বছরের বেশি সময় ধরে হয়ে আসছে এই পুজো। প্রতি বছর দীপান্বিতা অমাবস্যায় পূজিত হন মা। মাটির থানেই পুজো হয় মায়ের। আবার মাটিতেই মিলিয়ে যান মা। এটাই এই পুজোর মূল বিশেষত্ব।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ব্রিটিশ শাসিত বাংলায় জমিদার যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরীর উদ্যোগে প্রথম শুরু হয় এই কালীপুজো। যদিও তখনও বাংলা ভাগ হয়নি। শোনা যায় পুজো শুরুর জন্য স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন জমিদার যোগেন্দ্রনারায়ণ রায়চৌধুরী। কিন্তু, মন্দির যাতে করা না হয় সে বিষয়েও মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন আদেশ। আর সে কারণেই শত শত বছর ধরে মাটিতেই পুজো হয়ে আসছে কালীর। এমনকী পুজো শুরুর পর থেকে জমিদার বংশের সদস্যরা মাটিতেই শয়ন করতেন। এমমকী ইংরেজদের সঙ্গে যুদ্ধের সময় এই কালীর পুজো করেছিলেন জমিদারের বংশধরেরা। যদিও সেই কালী আদপে ছিল মায়ের রটন্তী রূপ। কিন্তু, মাটিতে পুজো হওয়ার কারণেই পরবর্তীতে মা এখানে ‘মা মাটিয়া কালী’ নামে পূজিত হতে থাকেন। এমনকী যে কোনও শুভ কাজে হাত দেওয়ার আগে মায়ের কাছে পুজো দেওয়া এখানের পুরনো রীতি। যা মেনে চলেন প্রায় সকলেই। 


তবে সেই জমিদারি এখন আর নেই। উঠে গিয়েছে জমিদারি প্রথা। বর্তমানে সম্পূর্ণ পুজোর দেখাশোনা করেন জমিদারের এক সেবায়েত ও তার বংশধরেরা। দীপান্বিতা অমাবস্যায় মায়ের পুজোর সময় দূরদূরান্ত থেকে ভক্তের সমাগম হয়, চলে মেলাও। দূর-দুরান্ত থেকে দর্শনাথীরা আসেন আমিনপুরে এখানকার শিবমন্দির আর ‘মা মাটিয়া কালীর’ দর্শন করতে। মন্দিরের সেবায়েতের বর্তমান বংশধর দীপা সিংহ বলেন, জমিদারি প্রথা উঠে যাওয়ার পর থেকে আমরাই পুজোর দেখাশোনা করি। প্রাচীন রীতি মেনে আজও বলি প্রথা রয়েছে মাটিয়া কালী পুজাতে। জাগ্রত এই কালী মা যেহেতু মাটির থানেই পূজিত হন, সে কারণে পুজো উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় আগত সকল দোকানদারেরা মাটিতে আসনেই বসে ব্যবসা করেন।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours