কালনা: এখনও এমন ঘটনা ঘটে যা পড়লে, দেখলে রীতিমত আমাদের চমকে উঠতে হয়। টানা এক বছর ধরে নিজের স্ত্রীর উপর করছেন শারীরিক অত্যাচার। কখনও মেরেছেন, কখনও যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দিয়েছেন কখনও…! আর স্বামীর এই অত্যাচার দীর্ঘদিন ধরে সহ্য করে আসছিলেন স্ত্রী। কিন্তু কী অপরাধ করেছিলেন তিনি?

যার ফলে এত জঘন্য ‘শাস্তি’ পেতে হচ্ছে তাঁকে? আসলে ওই মহিলা পরপর দু’বার কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। এটাই ছিল অপরাধ। স্বামী চেয়েছিলেন পুত্র সন্তান হোক। আর তা না পেতেই এমন অত্যাচার। আর এই ঘটনা অন্য কোনও রাজ্যের নয়। স্বয়ং এই রাজ্যের। এই বাংলার।

কী ঘটেছে?
নিন্দাজনক এই ঘটনা ঘটেছে কালনায়। অভিযোগ, সেখানকার এক গৃহবধূ কন্যা সন্তানের জন্ম দেওয়ায় যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে পাশবিক অত্যাচার চালায় তার স্বামী। শনিবার গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে কালনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিত্‍সা চলছে ওই মহিলার।

পরিবার সূত্রে খবর, ২০১৬ সালে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় ওই গৃহবধূর। বিয়ের পরপরই দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। একজন শিশুর বয়স পাঁচ অপর শিশুর বয়স দুই বছর। বারবার কন্যাসন্তানের জন্ম হওয়ায় বেঁকে বসে মহিলার স্বামী। গৃহবধূর ওপর শুরু হয় পাশবিক অত্যাচার, কখনো যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে, কখনো যৌনাঙ্গের পাশে সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষে এবং গৃহবধূর বুকের ওপর মারধর করে বেশ কয়েক মাস ধরেই পাশবিক অত্যাচার চালাচ্ছিল তার স্বামী। এমনকি স্বামী তাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেবে এমনও জানিয়েছিল।

কিন্তু অত্যাচারের পরিমাণ দিনদিন বেড়েই চলছিল। এরপর শনিবার ওই গৃহবধূর পরিবারের মানুষজন কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে তাঁকে। তারপর থেকেই হাসপাতালে চিকিত্‍সাধীন ওই গৃহবধূ। ঘটনার পর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন মহিলার বাবা ও ভাই। তবে এখনও অধরা অভিযুক্ত।

ওই গৃহবধূর বাবা বলেন, “আমার দুই নাতনী হয়েছে। জামাই চেয়েছিল ওর ছেলে হবে। শ্বশুরবাড়ি থেকে বলা হয় মেয়ের যেন আর সন্তান না হয় সেই চিকিত্‍সা করিয়ে তবেই শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এরপর ওরা আমার মেয়ের উপর যে অত্যাচার করত তা বলে বোঝানো যাবে না। ওরা এত মেরেছে তারপরও চিকিত্‍সা করায়নি। এরপর আমি সকালে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসি। আর তারপর চিকিত্‍সা করাই।” অন্যদিকে, নির্যাতিতা বলেন, “পরপর দু’বার কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছিলাম। তারপর থেকেই আমার স্বামী আমার উপর ভয়ঙ্কর অত্যাচার চালায়। কখনও যৌনাঙ্গে রড ঢুকিয়ে দেয়, কখনও রড দিয়ে মারধর করত।”

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours