ওমিক্রন আতঙ্কে কাঁপছে গোটা দেশ। এরই মধ্যে ভয় বাড়াল ব্রিটেন থেকে কলকাতায় আসা এক তরুণী। শুক্রবার গভীর রাতে বিমানটি কলকাতায় অবতরণ করে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী সঙ্গে সঙ্গে আরটিপিসিআর করা হয় যাত্রীদের। এর পরই এক তরুণীর রিপোর্ট পজিটিভ আসে।তড়িঘড়ি ওই যাত্রীকে অন্যান্য যাত্রীদের থেকে আলাদা করে রাখা হয়। তারপরই অ্যাম্বুলেন্সে করে পাঠানো হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। পরে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকুরিয়ার বেসরকারি এক হাসপাতালে।

একই সঙ্গে ওই তরুণীর জেনোম সিকোয়েন্সিং করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে। এ ছাড়াও ওই বিমানে আশা যাত্রীদের আরটিপিসিআর করানোর পর ছেড়ে দেওয়া হলেও হোম আইসোলেশন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই যাত্রীদের প্রত্যেকের দিকে নজর রাখবে স্বাস্থ্যদফতর।

কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে খবর, ব্রিটেন থেকে দোহা হয়ে কলকাতা এসে পৌঁছন ওই তরুণী। তিনি ব্রিটিশ নাগরিক। আলিপুরে তাঁর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। কলকাতাগামী কাতার এয়ারওয়েজের যে বিমান রাত ২টো ৩০ নাগাদ কলকাতায় পৌঁছয় সে বিমানেরই যাত্রী ছিলেন ওই তরুণী। বিমানবন্দরে অবতরণের পর বাকি যাত্রীদের সঙ্গে তাঁরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। দেখা যায় রিপোর্ট পজিটিভ। এরপরই সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এদিকে এই ঘটনার পরই শহরে দানা বেধেছে ওমিক্রন আতঙ্ক।

গোটা বিশ্বের চিকিত্‍সকমহল এই মুহূর্তে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ মনে করছেন, ততটা প্রাণঘাতী নয় এই ভ্যারিয়েন্ট। অন্য পক্ষের মত, এই ওমিক্রন ভয়ঙ্কর রূপ নিতে পারে। যে কোনও সময় মিউটেশন হয়ে জীবনের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

এ বিষয়ে চিকিত্‍সক শুদ্ধসত্ত্ব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খেয়াল করলে দেখবেন ২০২০ সালের ৭ মার্চের যে সময়টা তাতেই যেন ফিরে যাচ্ছি। যে ভাবে কোভিড এখানে এসেছিল, বাইরে থেকে একজন একজন করে কোভিডের ভাইরাস নিয়ে এসেছিল, এরপর ধীরে ধীরে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ওমিক্রন এমন একটা ভ্যারিয়েন্ট এখনও অবধি যা জানা গিয়েছে, খুব ছোঁয়াচে। তবে মারণ ক্ষমতাটা অতটা ভয়ঙ্কর নয়। এটাই আশার কথা। কিন্তু চিন্তা হল বয়স্কদের নিয়ে। জুন জুলাইয়ে অধিকাংশের টিকাকরণ হয়েছে। ফলে তাঁদের ইমিউনিটিও অনেকটা কমে এসেছে। ফলে এই মানুষগুলোর ঝুঁকি থাকবে। যাঁরা টিকা নেননি তাঁদেরও ঝুঁকি কম নয়। একইসঙ্গে এখনও তো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না এই ভ্যারিয়েন্টে ভ্যাকসিন কতটা কার্যকর।”

অন্যদিকে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুই বলেন, “এটা খুব বড় করে দেখলে চলবে না। কারণ, এটা প্রত্যাশিতই আমাদের এখানেও একটা সময় এটা আসবে। ভারতে ইতিমধ্যেই এসেছে। বিভিন্ন মেট্রোপলিটনে সংক্রমণ দেখাও গিয়েছে। কলকাতাও বাদ যাবে তেমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। বিদেশের সংযোগ যেখানে রয়েছে ওমিক্রন আসাটা সেখানে খুবই প্রত্যাশিত। সতর্ক থাকা এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সমস্ত নিয়ম মেনে পরীক্ষানিরীক্ষা করাই মূল কর্তব্য হবে আমাদের।”
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours