দুর্গাপুজো শেষ হতেই চিকিত্‍সকদের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে আবার বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমণ। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, উত্তরের তুলনায় শহরের দক্ষিণে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে ১০ নম্বর বরো নিয়ে বেশি মাথাব্যথা ছিল পুর স্বাস্থ্য দফতরের। পুজোর পরে দেখা যাচ্ছে, এ বারও সেই বরোয় আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি।পুরসভা জানিয়েছে, ১০ নম্বর বরো এলাকার ৯৬ নম্বর ওয়ার্ডের রিজেন্ট এস্টেট এবং ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের গাঙ্গুলিবাগান, নাকতলা, রামগড়, লক্ষ্মীনারায়ণ কলোনি ও যাদবপুরে মানুষ বেশি করে আক্রান্ত হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০০ নম্বর ওয়ার্ডেই আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন।

সংক্রমণের নিরিখে তার পরেই রয়েছে ১২ নম্বর বরো। ইএম বাইপাস লাগোয়া বিভিন্ন ওয়ার্ড, যাদবপুরের কিছু অংশ, পূর্ব যাদবপুর, গরফা ও নয়াবাদের মতো এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, ১০ ও ১২ নম্বরের পরে রয়েছে ১১ নম্বর বরো। গড়িয়া, বাঘা যতীন, পাটুলি ও যাদবপুরের একাংশ এই বরোর অন্তর্গত। কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে এর পরে রয়েছে ১৪ নম্বর বরো (বেহালা) এবং ১৬ নম্বর বরোর (জোকা) বিভিন্ন এলাকা।

১০ নম্বর বরোর কোঅর্ডিনেটর তপন দাশগুপ্ত বলেন, ''২২, ২৩ ও ২৪ অক্টোবর এই বরোয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৩৫, ৫০ ও ৫৭। আমার বরোয় ওয়ার্ডের সংখ্যা বেশি। করোনা-প্রবণ এলাকা ধরে ধরে জীবাণুনাশের কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে।''

পুর স্বাস্থ্য দফতর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, কলকাতায় অগস্টের মাঝামাঝি থেকে প্রায় রোজই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০০-র উপরে থেকেছে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি অবশ্য শহরে ওই সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। গত ১১ সেপ্টেম্বর কলকাতা পুরসভা এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ১২১ জন। এর পরে ২৩ অক্টোবর সেই সংখ্যা পৌঁছে যায় ৩১৮-এ। ২৪ অক্টোবর আক্রান্ত হন ২৭৩ জন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ২২৯ জন।

পুরসভা সূত্রের খবর, করোনার সংক্রমণ বেড়ে চলায় শহরে মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োন চালু করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখতে পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছিলেন ১৬টি বরোয়। তাতে বরোগুলির এগ্‌জিকিউটিভ হেলথ অফিসারদের এলাকার নাম ধরে তালিকা জমা দিতে বলা হয়েছিল সোমবারের মধ্যে। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই তালিকা জমা পড়লেও মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োনের কোনও তালিকা সোমবার রাত পর্যন্ত চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি।

কলকাতা পুরসভার এক কর্তা বলেন, ''কলকাতায় কন্টেনমেন্ট জ়োন বা মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োন চালু করা খুব কঠিন। এই ধরনের ব্যবস্থা চালু করা হলে প্রচুর মানুষ সমস্যায় পড়বেন।''

উদাহরণ হিসাবে ওই কর্তা জানিয়েছেন, ছোট ছোট আবাসনকে মাইক্রো-কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় আনা সম্ভব হলেও বড় আবাসনে এই ব্যবস্থায় ভোগান্তি বাড়বে। পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের বাজারগুলিতে ফের করোনা পরীক্ষা চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours