দেওয়াল লিখন স্পষ্ট ছিল। দ্য ওয়ালেও তা আগেই লেখা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত হলও তাই। বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতির পদ থেকে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) সরিয়ে দিলেন মোদী-শাহ। দিলীপের পরিবর্তে নতুন রাজ্য সভাপতি হলেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। বাংলায় ভোট বিপর্যয় হতেই দিলীপের বিরুদ্ধে দলের মধ্যে থেকে আঙুল উঠেছিল। ব্যর্থতার দায় সরাসরি দিলীপ ঘোষের উপর চাপিয়েছিলেন অনেকেই। সূত্রের মতে, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বাবুল সুপ্রিয়ও পষ্টাপষ্টি জানিয়েছিলেন, রাজ্য সভাপতি পদ থেকে দিলীপকে সরানো হোক। বরং বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সভাপতি দুটি পদের দায়িত্বই শুভেন্দু অধিকারীকে দেওয়া হোক। বিজেপিতে এক ব্যক্তি দুই পদের ব্যবস্থা নেই। তবে বিজেপির শীর্ষ সূত্রে বলা হচ্ছিল, এমন কাউকে রাজ্য সভাপতি করা হবে যাঁর রাজনৈতিক ওজন শুভেন্দুর তুলনায় কম। অর্থাত্‍ যিনি শুভেন্দুর সঙ্গে তালমিল রেখেই কাজ করবেন। বাংলার বিধানসভা ভোটকেই এবার পাখির চোখ করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। ২০০ আসন জেতার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছিলেন। রাজ্য নেতৃত্বও ভাঙা ক্যাসেটের মতো একই কথা বলেছিল বারবার। কিন্তু সেখানে একেবারে ভরাডুবি হয়েছে। মাত্র ৭৭ আসনে পদ্ম ফুটেছে। এই পরাজয়কে স্বীকার না করে বিজেপির একটা অংশ বলতে শুরু করেছিল তিন থেকে সাতাত্তর হওয়াই তাদের বড় প্রাপ্তি। দিলীপ ঘোষকে একথা একাধিকবার বলতে শোনা গিয়েছিল জোর গলাতেই। তবে এই দলের মধ্যেই অনেকে প্রশ্ন তুলেছিলেন, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে বিজেপির যা সাফল্য ছিল বিধানসভার তার প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। একটা সাংগঠনিক দুর্বলতা যে প্রকট হয়েছে, তা নিয়ে অস্বস্তি ছিলই। অনেকেই বলছিলেন, লোকসভা ভোটের পর বিজেপির মধ্যে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস কাজ করেছে। উত্তরবঙ্গে বিধানসভায় বিজেপির ফল মন্দের ভাল। কিন্তু ধ্বস নেমেছে জঙ্গলমহলে। পশ্চিমাঞ্চলে বিজেপি কার্যত ধুয়েমুছে গেছে। এই সাংগঠনিক গাফিলতির জন্য অনেকেই দায়ী করেছেন দিলীপ ঘোষকে। তাঁর কথাবার্তায় দলের অনেকেই বিরক্ত। তবে সেসব পাত্তা না দিয়ে দিলীপ ঘোষকে বারবার বলতে শোনা গেছে আমি এই ধরনের গরম গরম কথা বলি বলেই দলের অনেকে উজ্জীবীত হয়। আমার এই ভোকাল টনিক বিজেপির বৃদ্ধিতে কার্যকরী। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হয়েছিল। গত কয়েক মাস ধরে হটনা পরম্পরায় আজকের মোদী-শাহের এই সিদ্ধান্ত একপ্রকার নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।

Share To:

kakdwip.com

Post A Comment:

0 comments so far,add yours